মাদ্রাসা শিক্ষায় বিজ্ঞান চর্চার গুরুত্ব অনুধাবন করে কালনা মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় বিজ্ঞান বিভাগ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে শুক্রবার (২৭ জুন) সকাল ১০টায় বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিদর্শক (কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়) শরীফ মুহাম্মদ ইউনুছ স্যার মাদ্রাসাটি পরিদর্শন করেন। এই পরিদর্শন মাদ্রাসা শিক্ষায় আধুনিকায়ন ও শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পরিদর্শনকালে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তারা মাদ্রাসা শিক্ষায় বিজ্ঞান শিক্ষার অপরিহার্যতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা তৈরি করা এবং তাদের আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম করে তোলা। সভাপতির বক্তব্যে বেজপাড়া হায়াতুন্নেছা দাখিল মাদ্রাসার সুপার এবং কালনা মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি একেএম আজহারুল ইসলাম বলেন, “মাদ্রাসা শিক্ষা শুধু ধর্মীয় জ্ঞানার্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা ব্যবস্থা যা শিক্ষার্থীদের পার্থিব ও অপার্থিব উভয় জীবনে সফল হতে সাহায্য করে। বিজ্ঞান বিভাগ চালুর মাধ্যমে কালনা মহিলা দাখিল মাদ্রাসা আধুনিক শিক্ষার সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন দ্বার উন্মোচন করবে।” কালনা মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার মুহাঃ শাহবাজ হোসেন তার বক্তব্যে বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “বর্তমান যুগে বিজ্ঞান ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীই পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে পারে না। বিজ্ঞান বিভাগ চালুর ফলে আমাদের শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞান লাভ করে দেশের অগ্রগতিতে অবদান রাখতে পারবে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন মাদ্রাসার সহ-সুপার মোহাম্মদ খলিলুল্লাহ, কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এস. এম. এ রউফ, সহ শিক্ষক এস্কান্দার কবির,সহ-মৌলভী আব্দুল হামিদ এবং মুহাঃ আবু তাহের। বক্তারা সকলেই মাদ্রাসা শিক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন এবং এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান। এ সময় মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কালনা মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় বিজ্ঞান বিভাগ চালুর এই উদ্যোগ শুধু এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্যই নয়, বরং সমগ্র মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি মাইলফলক। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন ধর্মীয় শিক্ষার মান অক্ষুণ্ণ থাকবে, তেমনি অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে সুশিক্ষিত হয়ে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ধরনের উদ্যোগ দেশের অন্যান্য মাদ্রাসাকেও বিজ্ঞান বিভাগ চালুতে উৎসাহিত করবে এবং মাদ্রাসা শিক্ষায় একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।