1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাগেরহাট কচুয়ায় ইউএনও বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ভালুকায় ইউএনও’র ব্যতিক্রমী উদ্যোগে পাল্টে গেছে উপজেলার দৃশ্যপট-মুগ্ধ ভালুকাবাসী ময়মনসিংহে ওসি শিবিরুলের অভিযানে ১১০০ লিটার মদ উদ্ধার-গ্রেফতার ১৫ মাদারীপুরের শিবচর সকল মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশিত রায়গঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বিক্ষোভ, ২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় যশোরে ‘জুলাই আন্দোলনের’ আহত ও শহীদ পরিবারের সঙ্গে এনসিপির মতবিনিময় সভা ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শ্লোগানে এগিয়ে চলার প্রত্যয় কেন্দুয়া স্কুলের মধ্য একমাত্র প্রতিষ্ঠান শতভাগ পাস কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ নেছারাবাদে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল, শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা কালুডাঙ্গা শেখ পাড়া জামে মসজিদ পরিদর্শন শেষে উন্নয়ন কাজের জন্য সাইফুল ইসলামের অনুদান প্রদান নড়াইলে দুই পক্ষের মারামারী, নিহত-১

পথশিশু রবিনের স্বপ্ন—অভাবের মাঝে আলো খোঁজা।

আল হাসান আকুন্ঞ্জী
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২৫৮ বার পড়া হয়েছে
খুলনার ব্যস্ততম সড়কগুলোর একপাশে দাঁড়িয়ে ছোট্ট রবিন ফুল বিক্রি করে। ক্লান্ত-শ্রান্ত পথচারীদের গায়ে সে যেন এক অনুনয়ের সুর তোলে— “স্যার, একটা ফুল নেবেন? খুব ঘ্রাণ!”
মাত্র ১২ বছরের এই শিশুর জীবন অন্যদের মতো সহজ ছিল না। একসময় সে খুলনা মহানগরীর জেলখানা ঘাটে নৌকা ট্রলারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। সকাল ছয়টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত হাড়ভাঙা পরিশ্রমের বিনিময়ে পেতো মাত্র ১০০ টাকা। কিশোর শরীরে এই পরিশ্রমের ভার সইতে না পেরে সে ফুল বিক্রির পথ বেছে নেয়। এখন কিছুটা বেশি আয় হয়, কিন্তু দারিদ্র্যের চক্র থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ এখনো মেলেনি। রবিনের জন্ম এক হতদরিদ্র পরিবারে। বাবা দিনমজুর, মা গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। পরিবারের অন্য ভাই-বোনদের মুখে দু’বেলা খাবার তুলে দিতেই হিমশিম খেতে হয় তাদের। শিক্ষার আলো ছুঁয়ে দেখার স্বপ্ন রবিনের আছে, কিন্তু অভাবের শৃঙ্খলে বাঁধা পড়ে তা যেন অধরাই থেকে যাচ্ছে। “আমি পড়তে চাই, বড় হতে চাই, কিন্তু ফুল না বেচলে খাবো কী?”—রবিনের কচি কণ্ঠে এই প্রশ্ন যেন সমাজের বুকে এক গভীর প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দেয়।
শিশুশ্রম: এক নিষ্ঠুর বাস্তবতা,
বাংলাদেশে রবিনের মতো হাজারো পথশিশু রয়েছে, যারা ন্যূনতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত। শিশু অধিকার আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে কোনো শিশুকে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত করা আইনত অপরাধ। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। বেঁচে থাকার তাগিদে দরিদ্র পরিবারের শিশুরা অল্প বয়সেই কাজে নামতে বাধ্য হয়। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রায় ৪০ লাখ শিশু কোনো না কোনো শ্রমের সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে অনেকেই ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। রবিন সেই তালিকায় হয়তো একটু কম ঝুঁকিপূর্ণ কাজ বেছে নিয়েছে, কিন্তু তার মৌলিক অধিকার—খাদ্য, শিক্ষা, নিরাপত্তা—সবকিছুই আজ অনিশ্চিত। সমাধানের পথ কোথায়? রবিনের মতো শিশুদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সরকার ও সমাজের দায়িত্ব রয়েছে।
১. সতর্ক নজরদারি: শ্রম অধিকার বাস্তবায়ন ও পথশিশুদের জন্য সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে হবে। 2. শিক্ষার সুযোগ: এনজিও ও সমাজসেবী প্রতিষ্ঠানগুলো যদি পথশিশুদের জন্য শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে, তাহলে তারা শিক্ষা ও স্বপ্ন দুটোই একসঙ্গে এগিয়ে নিতে পারবে। 3. পুনর্বাসন কর্মসূচি: শিশুদের অর্থনৈতিক সহায়তা ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
শেষ কথা, রবিনের স্বপ্ন হয়তো খুব বড় নয়—সে শুধু স্কুলে যেতে চায়, পড়তে চায়। কিন্তু সমাজের নানা প্রতিকূলতায় তার সেই স্বপ্ন ধূসর হয়ে যাচ্ছে। একটু সহানুভূতি, একটু সুযোগ—এই শিশুদের জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে। সমাজ কি রবিনের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবে? প্রশ্ন রইল সবার কাছে।
এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com