পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জহরলাল বসাক তুলসীর বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পাবনায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পাবনা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানা।
মানববন্ধনে হিমেল বলেন, “একজন অবসরপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান শিক্ষাবিদ এবং সমাজের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তির ওপর এ ধরনের হামলা শুধু ন্যাক্কারজনক নয়, এটি সমাজের নৈতিকতা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।” তিনি অবিলম্বে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।
সভাপতিত্ব করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইয়ামিন খান। সঞ্চালনা করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা।
আরও বক্তব্য দেন— জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব কমল শেখ টিটু, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জুবায়ের খান প্রিন্স, যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তাহাজ্জত হোসেন তুষার ও দিপংকর সরকার জিতু, স্বেচ্ছাসেবক দলের দপ্তর সম্পাদক সোমনাথ বাগচি।
মানববন্ধনে ঘটনার সাথে জড়িত দুইজন মুখোশধারী যুবককে তিন দিনের মধ্যে গ্রেফতারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আল্টিমেটাম দেন নেতাকর্মীরা।
এই কর্মসূচিতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুর মোঃ মাসুম বগা, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুল হক লিটন, জেলা যুবদল সদস্য কবির হোসেন, জাকির হোসেন জ্যাকি ও শরিফুল ইসলাম লিটু, সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গোলাম জাহিদ রুপম, এডওয়ার্ড কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শরিফুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাজিব হোসেন, সদস্য রানা, জনি কোরাইশিসহ আরও অনেকে।
ঘটনার পটভূমি: উল্লেখ্য, গত ২৭ জুলাই দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে ২২-২৪ বছর বয়সী দুইজন মুখোশধারী যুবক পাবনার শিবরামপুর এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জহরলাল বসাক তুলসীর বাড়িতে ঢুকে পরিবারের নারী সদস্যদের বেঁধে ফেলে। পরে বিকেল চারটার দিকে অধ্যাপক তুলসী বাসায় ফিরে এলে তাকে মাথায় আঘাত করে গুরুতর আহত করে হামলাকারীরা। দুর্বৃত্তরা বাড়ির আলমারি ভেঙে ডাকাতির চেষ্টা চালায় এবং একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এ হামলা শুধুমাত্র ডাকাতি নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাচেষ্টা ছিল।
এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত পুলিশ জানিয়েছে, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), পাবনার একটি বিশেষ টিম ঢাকায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেফতার করেছে। তাকে পাবনায় আনা হচ্ছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
পাবনার বুদ্ধিজীবী মহল, শিক্ষক সমাজ ও নাগরিকরা এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।