‘বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। পেছনে ফিরে শুধু আগুন আর ধোঁয়া দেখতে পেয়েছিলাম। সেখানে অনেক শিশু ও অভিভাবক ছিলেন।’ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মাসুদ তারিক। আজ সোমবার স্কুলটির ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজ। এতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন।
মর্মান্তিক এ ঘটনায় রয়টার্সের প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর অন্তত ১৯ জন নিহত, আহত অনেকে’। এ ঘটনায় গুরুত্ব দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি, আল–জাজিরা, এনডিটিভি, ডন, এএফপি, এপিসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও বার্তা সংস্থা।
‘বিদ্যালয়ে বাংলাদেশের বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত অন্তত ২০’—শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। তাতে বলা হয়েছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এফ-৭ প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারে হাত লাগিয়েছেন শিক্ষার্থীরাও। দুর্ঘটনাস্থলের কাছে রক্তদান করতে জড়ো হয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
যুক্তরাষ্ট্রের আরেক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এটিকে বাংলাদেশের অন্যতম প্রাণঘাতী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা বলে উল্লেখ করেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিমানবন্দরে তুমুল বৃষ্টির মধ্যে অবতরণের সময় একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। এতে ৪৯ জন নিহত হন। ওই উড়োজাহাজে থাকা কোনো আরোহীই বেঁচে ফিরতে পারেননি।
দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন বিদ্যালয়ের ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপির। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে একটি যুদ্ধবিমান এখানে আছড়ে পড়ে। এতে বিকট শব্দ হয়। ভূমিকম্প হচ্ছে বলে মনে হচ্ছিল। তারপর এটিতে আগুন ধরে যায়। পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী পৌঁছায়।’ এ ঘটনায় বহু ছবিও প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থাটি।
উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির সংবাদের শিরোনাম,‘বাংলাদেশের বিদ্যালয়ে বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে নিহত অন্তত ১৯’। আলাদা একটি ভিডিও–ও প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি। এ ঘটনায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক আরেক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান সংবাদ প্রকাশ করেছে।
বিদ্যালয়ে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ভারতের প্রায় সব জাতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন তিনি।