ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কার্যালয় থেকে অফিসের পরিচ্ছন্নতা কর্মী রকিবুল হাসানকে সরকারি লবণ চুরির ঘটনায় চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
রবিবার (৬ জুলাই) বিকেলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রকিবুল হাসান বলেন, “আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মী (মাস্টার রোলে) হিসেবে চাকরি করতাম। চাকরি হওয়ার পর থেকে উপজেলা পরিষদের সিএ (ক্লার্ক কাম অ্যাকাউন্ট্যান্ট) রাশেদ আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করতে থাকে। সে বিভিন্ন সময়ে সরকারি মালামাল নিয়ে যেত। আমি বিষয়গুলো ইউএনও স্যারকে অবহিত করলে সে আমার উপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
সর্বশেষ ঈদুল আজহার সময় বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসায় কোরবানির চামড়া সংরক্ষণের জন্য সরকারি লবণ আসে। সেই লবণ ইউএনও অফিসের নৈশ্যপ্রহরী সম্রাট ঈদের আগের দিন রাত ১১টার দিকে চুরি করে দোকানে বিক্রি করার সময় জনগণের হাতে ধরা পড়ে। তখন আমি বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছিলাম। এ সময় উপজেলা পরিষদের কর্মচারী নাজিম আমাকে ফোন করে অফিসে আসতে বলে।
অফিসে আসার পর নাজিম আমাকে বলে, ‘সম্রাট (নৈশ্যপ্রহরী) সরকারি চাকরি করে। লবণ চুরি করে এখন ধরা পড়েছে। তুই এখন অফিসে গিয়ে চুপচাপ থাকবি। তারা যা বলবে, সব “জি স্যার” করবি। তোর ব্যাপারে সব কিছু সিএ সাব দেখে নেবেন। তোর কিছু হবে না।’
পরে আমাকে চাকরিচ্যুত করে নিজের ভাগ্নে আল আমিনকে আমার পদে চাকরি দেওয়া হয়।”
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, “যে লবণ চুরি করেছে তার কিছুই হয়নি। সে (সম্রাট) এখনো ইউএনও অফিসে চাকরিতে বহাল আছে। আমাকে ভুল বুঝিয়ে সরকারি লবণ চুরির দায় আমার উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের সিএ রাশেদুল হাসান বলেন, “চুরির ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য রকিবুল এসব কথা বলছে।” ইউএনও অফিসে ভাগ্নের চাকরির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সে (আল আমিন) আমার কিছুই না।”
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা নাসরিন বলেন, “লবণ চুরির ঘটনায় অফিসের দুইজন কর্মচারী জড়িত। এ ঘটনায় রকিবুলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। অন্যদিকে সম্রাটের বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”