1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ০৬:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নড়াইলে ফসলের জমিথেকে মানুষের কঙ্কাল ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ উদ্ধার রাজশাহী নির্বাচন অফিসে দুদকের অভিযান মাগুরার শালিখার বুনাগাতী ইউনিয়ন বিএনপির ওয়ার্ড কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন। কাইজার বিশ্বাসের গ্রুপ নিরঙ্কুশ বিজয় উপকূলীয় এলাকায় ৩ শতাধিক রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিল নৌবাহিনী উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে ওবিই কারিকুলাম প্রণয়ন অপরিহার্য: বেরোবি উপাচার্য পিরোজপুরে ০৩ দিন ব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি ও পুষ্টি মেলা উদ্বোধন উপলক্ষে রেলি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ঝিনাইগাতীতে কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ১ বগুড়া সদর উপজেলার এখলাছসহ ৭ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের শিবচরে বেইলী ব্রিজ বাজারে প্রতারণার অভিযোগে নারী আটক কুড়িগ্রামে আওয়ামী লীগের ৬ জন নেতাকর্মী গ্রেফতার করেছে পুলিশ

ইন্দুরকানীতে বেড়িবাঁধের অভাবে ঝুঁকিতে লক্ষাধিক মানুষ

কামরুল আহসান (সোহাগ)
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার কচা ও বলেশ্বর নদীবেষ্টিত এলাকার অধিকাংশ স্থানেই পর্যাপ্ত ও টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় জলবায়ু বিপর্যয় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ। প্রতিটি বর্ষা মৌসুম ও ঘূর্ণিঝড়ের সময় এসব অঞ্চলের মানুষের জীবনে নেমে আসে ভয়াবহ দুর্ভোগ।
১৯৯৬ ও ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধারাবাহিক ভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ছিলেন ইন্দুরকানী উপজেলার সাঈদখালী গ্রামের আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইন্দুরকানীর দীর্ঘ এলাকা জুড়ে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে ইন্দুরকানীর সকল বেড়িবাঁধ বিদ্ধস্ত হয়। মারা যায় অর্ধশতাধিক লোক। নিখোঁজ হয় শতাধিক বাসিন্দা। যাদের আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর পর থেকে বেড়ি বাঁধের উল্লেখ যোগ্য কোন সংস্কার করা হয়নি।
এ বিষয়ে ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী জানান, আমার আব্বা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী‘র নিজ হাতে গড়া এই উপজেলায় যাতে কোন উন্নয়ন কর্মকান্ড না হয় সে জন্য গত ১৫ বছর ধরে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছে পলাতক হাসিনা সরকারের সহযোগিরা। যার জন্য এই এলাকায় কোন টেকসই বেড়ি বাঁধ আজ পর্যন্ত নির্মাণ করা হয় নাই। ফলে বেড়ি বাঁধের অভাবে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। এই উপজেলায় টেকসই বেড়ি বাঁধ নির্মাণের জন্য আমি সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
 স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ—দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বেশিরভাগ বাঁধ ভাঙা ও জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নদীর স্রোত বাড়লেই সেইসব বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। বিশেষ করে বেড়ি বাঁধ না থাকায় উপজেলার বালিপাড়ার সাঈদখালী বাজার থেকে কালাইয়া আবাসন পর্যন্ত দীর্ঘ এক কিলোমিটার জায়গার বেড়িবাঁধ ঘূর্ণিঝড় রিমাল এর আঘাতে সম্পূর্ণ বিলিন হয়ে গিয়েছে। এছাড়া চন্ডিপুর, বালিপাড়া, চাড়াখালী, ইন্দুরকানী, চরবলেশ্বর, কালাইয়া, কলারনের নদী পারের মানুষ বেড়ি বাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি ও বন্যায় প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ইন্দুরকানী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ করিম তালুকদার ইমন জানান, জোয়ারের পানি সামান্য বৃদ্ধি পেলেই নদী তীরবর্তী এলাকায় ফসলের মাঠ, মাছের ঘের, ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট সবকিছুই প্লাবিত হয়। বিশেষ করে টেকসই বেড়ি বাঁধ নাথাকায় চরম ভাবে নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে ইন্দুরকানী উপজেলা ভূমি অফিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সসহ ইন্দুরকানী বাজারের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ। এসব স্থাপনা যে কোন সময় নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সাঈদখালী গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, ইন্দুরকানীর প্রধান জীবিকা কৃষি ও মৎস্য চাষ। তবে বেড়িবাঁধ না থাকায় ফসলের মাঠে নোনা পানি ঢুকে পড়ছে; এতে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমছে এবং উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। মাছের ঘেরগুলোও নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বলেশ্বর নদ পাড়ের চাড়াখালী গ্রামের আবাসনের বাসিন্দা সোহাগ কাজী বলেন, বেড়ি বাঁধ না থাকায় সামান্য জোয়ারেই আমাদের ঘর গুলোতে পানি উঠে যায়। রান্নার চুলাও পানিতে ডুবে থাকে। বর্ষা মৌসুমে অনেক সময়ই না খেয়ে থাকতে হয় আবাসনের লোকদের।
কঁচা নদীর পাড়ের কালাইয়া আবাসনের বাসিন্দা শারমিন আক্তার জানান,ঝড় বন্যার সময় ছোট শিশুদের নিয়ে আশ্রয় নেয়ার মতো কোন ব্যবস্থা নেই আবাসনের আশেপাশে। তাই জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে সবাইকে আতঙ্কে থাকতে হয়। এখানে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করা খুব জরুরি।
ইন্দুরকানী উপজেলার নদী তীরবর্তী লক্ষাধিক মানুষ আজ প্রকৃতির করুণার ওপর নির্ভরশীল। আধুনিক ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে এসব মানুষের জীবন-জীবিকার স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। নয়তো প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে নতুন করে দুর্ভোগ পোহাতে হবে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে।
ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাসান বিন মুহাম্মদ আলী জানান—“নদীতীরবর্তী জনগণের জীবন-জীবিকার নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাঁধ খুব দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে। ”
এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com