1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন

এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে কম্বোডিয়ায় হামলা চালাল থাইল্যান্ড

জনাব মুহাম্মদ রবিউল ইসলাম বাপ্পী | দেশ বুলেটিন প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫
  • ১৪২ বার পড়া হয়েছে

সীমান্ত নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সংঘাতে জড়িয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সামরিক বাহিনী। সংঘাতে থাইল্যান্ডে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্যাংকক সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়। এই সংঘাতের মধ্যে কম্বোডিয়ায় এফ–১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে বোমাবর্ষণ করেছে থাইল্যান্ড।

কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের মধ্যে সীমান্ত দ্বন্দ্ব শত বছরের বেশি পুরোনো। সীমান্তে বিরোধপূর্ণ অঞ্চলটি ‘এমারেল্ড ট্রায়াঙ্গল’ নামে পরিচিত। এই অঞ্চলে ১১ শতকের একটি মন্দির নিয়ে ২০০৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড শত্রুতা বাড়ে। এরপর বছরের পর বছর ধরে সীমান্ত সংঘাতে দুই দেশে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

সীমান্তে তা মোয়ান থম নামের একটি মন্দিরের কাছে আজ প্রথম দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হয়। সংঘাত শুরুর জন্য একে অপরের ওপর দোষারোপ করছে তারা। থাইল্যান্ডের দাবি, সীমান্তের কাছে তাদের বাহিনীর ওপর কম্বোডিয়া নজরদারি করতে ড্রোন মোতায়েনের জেরে সংঘাত শুরু হয়েছে। আর কম্বোডিয়ার দাবি, চুক্তি লঙ্ঘন করে ওই মন্দিরের দিকে অগ্রসর হয়েছিল থাই বাহিনী।

থাইল্যান্ডের কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, কম্বোডিয়ার হামলায় দেশটির সুরিন, উবন রাতচাথানি ও শ্রিসাকেত প্রদেশে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সমসাক থেপসুথিন বলেছেন, হামলায় নিহত ১২ জনের মধ্যে এক শিশুসহ ১১ জনই বেসামরিক লোকজন। আর একজন সেনাসদস্য রয়েছেন। কম্বোডিয়ার গোলাবর্ষণে ২৪ জন বেসামরিক নাগরিক ও ৭ সেনাসদস্য আহত হয়েছেন।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিজেদের কোনো হতাহতের তথ্য জানায়নি কম্বোডিয়া সরকার। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের যুদ্ধবিমান কম্বোডিয়ার একটি সড়কে দুটি বোমা বর্ষণ করেছে। বোমা হামলার কথা স্বীকার করে থাইল্যান্ডের সেনা কর্মকর্তা রিচা সুকসুওয়ানন রয়টার্সকে বলেছেন, তাঁদের একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কম্বোডিয়ার সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।

সংঘাত শুরুর পর সীমান্ত এলাকা থেকে নিজ নিজ দেশের বাসিন্দাদের সরে যেতে বলেছে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড। নিরাপদ স্থানে ৪০ হাজার জনকে সরিয়ে নিচ্ছে ব্যাংকক সরকার। এ ছাড়া কম্বোডিয়ার সঙ্গে নিজেদের সীমান্ত বন্ধ করেছে থাইল্যান্ড। আর প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক অবনমন করেছে কম্বোডিয়া। কম্বোডিয়ার অভিযোগ, থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী ‘অত্যধিক শক্তি’ প্রয়োগ করেছে।

দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার শুরু মে মাসে। সে সময় সংঘাতে কম্বোডিয়ার এক সেনা নিহত হন। বিগত কয়েক সপ্তাহে সীমান্তে সেনা উপস্থিতিও বাড়িয়েছে দুই দেশ। এরই মধ্যে সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে থাইল্যান্ডের এক সেনা আহত হন। এরপর গত বুধবার কম্বোডিয়া থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নেয় থাইল্যান্ড। কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের হুমকিও দেওয়া হয়। এতে উত্তেজনা বাড়ে।

সংঘাত শুরুর পর থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব আন্তর্জাতিক আইন মেনে সমাধান করতে হবে। অপরদিকে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত বলেছেন, তাঁর দেশও শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। তবে সামরিক ‘আগ্রাসনের’ জবাব সামরিকভাবে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। এমন পরিস্থিতিতে দুই পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের বর্তমান সভাপতি। এই জোটের সদস্য থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া।

 

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com