খুলনার কয়রায় তিন দিনব্যাপী ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। “ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন” প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এই মেলার আয়োজন করেছে। সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে এই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সঞ্জয় কুমার সরকারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস। উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সোহেল হোসেনের পরিচালনায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বক্তা ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষির গুরুত্ব ও এর বহুমুখী সুবিধা নিয়ে আলোচনা করেন।বক্তাদের বক্তব্যে ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষির গুরুত্ব অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ গোলাম নবী। তিনি ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে কৃষকদের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস তার বক্তব্যে বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের কৃষি খাত প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। এই মেলার মাধ্যমে কৃষকরা নতুন নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পারবে এবং তা তাদের কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োগ করে লাভবান হতে পারবে।”উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার সমীর কুমার সরকার মৎস্য খাতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে মৎস্য চাষে অভিযোজন কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোঃ মামুনার রশিদ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কৃষকদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরেন।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল কালাম আজাদ এবং উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার মোঃ রেজাউল করিম কৃষি শিক্ষায় আধুনিক প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তি এবং যুবকদের কৃষিখাতে আগ্রহী করে তোলার বিষয়ে কথা বলেন।এছাড়াও, খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান, উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা সুজাউদ্দিন, এবং উপ-সহকারী কৃষি অফিসারগণ যেমন এস এম ফারুক হোসেন, আল মাহফুজ, সাধক ঢালী, গুরুদাস মন্ডল, অনুতব সরকার, নাইমুর রহমান, মাহমুদুল হাসান, শাহ নেওয়াজ, ফরিদ হোসেন প্রমুখ ক্লাইমেট স্মার্ট কৃষির বিভিন্ন দিক, যেমন – নতুন জাতের ফসল, আধুনিক সেচ পদ্ধতি, এবং মাটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ওপর আলোকপাত করেন।এনজিও প্রতিনিধি অশোক কুমার দাস এবং স্থানীয় কৃষক গোলাম হোসেন ও নাসিমা খাতুন তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির সুফল সম্পর্কে জানান।আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন এবং প্রদর্শিত কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে অবগত হন। মেলায় সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধি সহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার পূর্বে এ উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা কয়রা সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়।