কলাপাড়ায় পাঁচজন মেডিকেল অফিসার পদায়নের ফলে দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে পড়া উপজেলা স্বাস্থ্যসেবায় প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে। ৫০ শয্যার কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক সংকটে ভুগছিল। প্রায় তিন লাখ মানুষের জন্য কোনো মেডিকেল অফিসার না থাকায় চিকিৎসা সেবা ছিল চরমভাবে ব্যাহত।
দীর্ঘ এক যুগ ধরে চলে আসা অনিয়ম, দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য এবং একটি প্রভাবশালী চিকিৎসক সিন্ডিকেটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। স্থানীয়ভাবে ব্যাপক জনমনে অসন্তোষের পাশাপাশি ছাত্র- জনতার একটি সচেতন অংশ আন্দোলনও গড়ে তোলে। অবশেষে আলোচিত ও বিতর্কিত পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জুনাইদ খান লেলিনকে বদলি করা হলে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে।
বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুনভাবে যোগ দিয়েছেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার সময় কর্মরত ছিলেন কেবল দুইজন জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. কামরুন্নাহার মিলি ও ডা. শরীফ শায়লা ইসলাম।
মেডিকেলঅফিসার না থাকায় দীর্ঘদিন চিকিৎসা কার্যক্রম জোড়াতালি দিয়ে চলছিল। ২৪৬টি পদের মধ্যে ১০৪টি পদ শূন্য রয়েছে, যার মধ্যে অধিকাংশই চিকিৎসক পদ।
এই দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে গত ১৫ থেকে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে চারজন মেডিকেল অফিসার পদায়ন করা হয়। তারা হলেন, ডা. ববি মালাকার, ডা. মো. মাহমুদুল হাসান, ডা. মো. আব্দুল মালেক মিয়া, ডা. মো. আতাউর রহমান।
এছাড়া ডা. মো. আমানত হোসেনও শিগগিরই যোগদান করবেন বলে জানা গেছে। নতুনদের আগমনে হাসপাতালে শৃঙ্খলা ও চিকিৎসাসেবায় গতি ফিরেছে। রোগীরা আগের তুলনায় অনেক বেশি স্বস্তি অনুভব করছেন। মঙ্গলবার রাতে হাসপাতাল পরিদর্শনে দেখা গেছে, বহির্বিভাগে আসা রোগীদের মাঝে সন্তোষজনক পরিবেশ বিরাজ করছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে কমপক্ষে ৬ জন মেডিকেল অফিসার পদায়ন করা হয়েছে। আরও চিকিৎসক শিগগিরই যোগ দেবেন বলে আশাবাদী। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”
স্থানীয়দের প্রত্যাশা, স্বাস্থ্যখাতে এই ইতিবাচক পরিবর্তন স্থায়ী হবে এবং কলাপাড়ার চিকিৎসা ব্যবস্থা আবারও পুরোপুরি সচল ও কার্যকর হয়ে উঠবে।