মাদারীপুর-৩ আসনের কালকিনিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা মার্কার প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
আজ শনিবার দুপুর সারে ১২ টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এসকেন্দার খাঁ (৬০)। নিহত এসকেন্দার খাঁ লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোসা. তাহমিনা বেগমের সমর্থক ও কর্মী বলে জানা যায়। সে কালকিনি উপজেলা লক্ষীপুর ইউনিয়নের ভাটবালী গ্রামের আমির হোসেন খাঁর ছেলে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আজ শনিবার সকাল ৭টার দিকে বাড়ির সামনের রাস্তায় হাঁটতে বের হন এসকেন্দার খাঁ। এ সময় মাদারীপুর-৩ আসনের নৌকা প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের সমর্থক ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক বেপারীর লোকজন হঠাৎ তার ওপর হামলা চালায়।
এ সময় হামলাকারীরা এসকেন্দার খাঁকে এলোপাথারি কুপিয়ে আহত করে। তার পায়ের রগও কেটে ফেলা হয়। বাঁধা দিতে এলে আরেকজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে দ্রুত পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। এ সময় স্থানীয়রা দুইজনকে উদ্ধার করে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে দুজনকেই বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসকেন্দার খাঁ সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর সারে ১২টার দিকে মারা যান। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে।
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন গেন্দু কাজী বলেন, আমাদের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী এসকেন্দার খাঁ সকালে তার বাড়ির সামনে হাটতে বের হলে হঠাৎ নৌকার সমর্থক ফজলুল হক বেপারীর লোকজন তাকে কুপিয়ে জখম করে। পরে তিনি বরিশালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
অপরদিকে নৌকার সমর্থক ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অভিযুক্ত ফজলুল হক বেপারীকে একাধিকবার ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মাদারীপুর-০৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোসা. তাহমিনা বেগম বলেন, আমার এক কর্মীকে নৌকার পক্ষের লোকজন কুপিয়ে হত্যা করেছে। আসলে সাধারণ ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়াতে তারা এগুলো করছে। শান্ত কালকিনি যাতে অশান্ত না হয় এজন্য আমি প্রশাসনকে জোরালো ভুমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।
কালকিনি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মারগুব তৌহিদ বলেন, গ্রাম্য দলাদলি ও রাজনৈতিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে সকাল ৭টার দিকে এসকেন্দার খাঁ বাড়ি থেকে বের হলে তাকে প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে জখম করেছে। পরে তাকে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অবস্থার অবনতি হলে পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ঘটনাস্থলে উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। এই ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং দোষী ব্যক্তিদের যত দ্রুত সম্ভব আইনের আওতায় আনা হবে।