কুড়িগ্রামে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখার উদ্যোগে দিনব্যাপী রুকন শিক্ষা শিবির/২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯ জুন ২০২৫ ইং বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় কুড়িগ্রাম জেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের হলরুমে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মোঃ নিজাম উদ্দিন এর সঞ্চালনায় জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোঃ আব্দুল মতিন ফারুকীর সভাপতিত্বে দিনব্যাপী রুকন শিক্ষার শিবির আরম্ভ হয়। রুকন শিক্ষা শিবিরে পবিত্র কুরআনের সূরাতুল বাকারার ১৭৭ নং আয়াত থেকে দারসুল কুরআন পেশ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের অন্যতম সদস্য রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারি অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন।
চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান বিষয়ে আলোচনা পেশ করেন অত্র শিক্ষা শিবিরের সভাপতি মাওলানা মোঃ আব্দুল মতিন ফারুকী । বাইয়াত বিষয়ে আলোচনা পেশ করেন জেলা জামায়াতের সম্মানিত সহকারি সেক্রেটারি মাওলানা মোঃ আব্দুল হামিদ মিয়া। নির্বাচনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা পেশ করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মোঃ নিজাম উদ্দিন। “দাওয়াতের কৌশল” বিষয়ে আলোচনা পেশ করেন জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক মোঃ আজিজুর রহমান সরকার স্বপন। “সাংগঠনিক কাজের দক্ষতা বৃদ্ধির” বিষয়ে আলোচনা পেশ করেন রংপুর দিনাজপুর অঞ্চলের অন্যতম টিম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল।
বিশেষ অতিথি হিসেবে “বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়” বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যা গুরু ও সংখ্যালঘু নয় বরং বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী সকলে মিলে বাংলাদেশী। সকলের সাথে সম্মানজনক ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল ইসলামী দলকে একত্রিত করে ভোট বাক্স একটি করে বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র গড়ে তোলা হবে। ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য স্থানীয় জনশক্তিকে পরামর্শ দেন। বিবাদে না জড়িয়ে দাড়ি, টুপি ও পাগড়ীওয়ালা সকলকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। প্রত্যেককে ঘরে ঘরে জনে জনে জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াত প্রদান ও নির্বাচনী কাজ মনোযোগের সাথে করতে হবে।
প্রধান অতিথি হিসেবে “আখেরাতের সফলতাই প্রকৃত সফলতা” বিষয়ে আলোচনা পেশ করেন বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, যে কাজেই আমরা করব সেটা নির্বাচন বা অন্য হোক সব আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আখেরাতের জন্যই হতে হবে। বিগত পলায়নকারী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের ১০ টাকা চালের প্রতারণা, আমার ভোট আমি দেবো, তোমার ভোটও আমি দেবো এবং বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডের নিন্দা জ্ঞাপন করেন। বর্তমানে ইসরাইলের বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডের নিন্দা এবং ফিলিস্তিনের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমরা ডাকাতের নির্বাচন চাই না। আমার ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আর ন্যায়বিচার একমাত্র কুরআনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। সুতরাং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও সংস্কারের পরই নির্বাচন দিতে হবে। সকলকে অন্যায়ের বিপক্ষে ন্যায়ের পক্ষে সাহসী ভূমিকা পালন করার জানান। তিনি বলেন, প্রত্যেক রুকনকে কুরাআনুল কারীমের সূরা ফাতেহা থেকে সূরা নাস পর্যন্ত অর্থসহ পড়তে হবে। জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য পরিবার পরিজনের সকলকে পড়াতে হবে। তিনি স্লোগানের সুরে বলেন, কুরআন শিখতে হবে, কুরআন শেখাতে হবে। আখেরাতের সফলতার জন্য সকলকে কাজ করার উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সকলকে আল্লাহর রাস্তায় জান ও মালের সর্বোচ্চ কুরবানী দিতে হবে। সকল কর্মীকে ভোটার কর্মী হতে হবে।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২৫ কুড়িগ্রাম- ১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী জননেতা অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, ২৬ কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী জননেতা এডভোকেট ইয়াসিন আলী ও ২৮ কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী জননেতা মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং জেলা জামায়াতের শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য বৃন্দ।