কুমিল্লা অঞ্চল প্রাচীন সমতট রাজ্যের অংশ ছিল।
ষষ্ঠ শতাব্দীতে, বৌদ্ধ ধর্ম এই অঞ্চলে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল।
লালমাই পাহাড়ে অবস্থিত ময়নামতি ও কোটবাড়ি স্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রমাণ।
ত্রিপুরা রাজ্যের অধীনে:
১৩ শতকের শেষভাগে, ত্রিপুরা রাজ্য এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ লাভ করে।
ত্রিপুরা রাজারা ময়নামতিতে তাদের রাজধানী স্থাপন করেন।
ত্রিপুরা রাজারা হিন্দু ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এবং মন্দির নির্মাণে উৎসাহী ছিলেন।
মুঘল আমলে:
১৬ শতকে, মুঘলরা ত্রিপুরা রাজ্য আক্রমণ করে।
১৭৩৩ সালে, ত্রিপুরার সমতল অংশ সুবাহ বাংলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
মুঘল আমলে, এই অঞ্চল কুমিল্লা নামে পরিচিতি লাভ করে।
ব্রিটিশ আমলে:
১৭৬৫ সালে, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার নিয়ন্ত্রণ লাভ করে।
১৭৯০ সালে, কুমিল্লা একটি মহকুমা হিসেবে স্থাপিত হয়।
ব্রিটিশরা এই অঞ্চলে চা বাগান স্থাপন করে এবং কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নে কাজ করে।
পাকিস্তান আমলে:
১৯৪৭ সালে, ভারত বিভাগের পর, কুমিল্লা পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হয়।
১৯৫০ সালে, কুমিল্লা একটি জেলা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
স্বাধীনতার পর:
১৯৭১ সালে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে কুমিল্লা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
স্বাধীনতার পর, কুমিল্লা একটি উন্নত জেলায় পরিণত হয়।
ত্রিপুরা থেকে কুমিল্লা:
কুমিল্লা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত রয়েছে।
কিছু মনে করেন, ‘কুমিল্লা’ নামটি ‘কমলাঙ্ক’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘পদ্মফুলের দীঘি’।
অন্যরা মনে করেন, ‘কুমিল্লা’ নামটি ‘কুমিল’ নামক একটি গ্রাম থেকে এসেছে।
ত্রিপুরা রাজারা এই অঞ্চলকে ‘কুমিল্লা’ নামে অভিহিত করতেন।
কুমিল্লা জেলার একটি সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময় ইতিহাস রয়েছে। ত্রিপুরা রাজ্য থেকে শুরু করে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমল, এবং স্বাধীন বাংলাদেশ, কুমিল্লা সর্বদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।