বাংলাদেশ হাটে ‘এসবি পরিবহন’-এর বেপরোয়া গতি: দুর্ঘটনার দায় নেবে কে?
আজ, কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী বিলাসবহুল এসবি পরিবহন-এর একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাজবাড়ীর বাংলাদেশ হাট এলাকায় যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করলো, তাকে কি শুধুই একটি দুর্ঘটনা বলা যায়? নাকি এটি চালকের বেপরোয়া গতির ফল? দাঁড়িয়ে থাকা একটি লোকাল বাসকে পেছন থেকে তীব্র ধাক্কা দেওয়ায় লোকাল বাসটি রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। এই দুর্ঘটনায় দুই বাসের প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সড়ক পথে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে রাষ্ট্র কি কোনো ‘বন্ড’ দেবে? এই মুহূর্তে এই সড়ক দুর্ঘটনার আসল খোঁজ চায় জনতা।
যাত্রীর দুর্ভোগ, গার্মেন্টস শ্রমিকের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ!
আহতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ—গরীব সাথী, গার্মেন্টস কর্মী বা ছোট ব্যবসায়ী। কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা এক গার্মেন্টস কর্মী, যার হাত ভেঙে গেছে, কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন, “আমরা গরিব মানুষ, ঢাকা যাচ্ছিলাম পেটের টানে। এখন হাতে এমন আঘাত! আমার কাজ কে করবে? এই দুর্ঘটনার দায়ে আমার সংসার চলবে কী করে? এই বাস কোম্পানিগুলোর বেপরোয়া গতির জন্য আমাদের জীবনটাই শেষ হয়ে যায়!” এই পরিস্থিতিতে ভাগ্যক্রমে কোনো প্রাণহানি না ঘটলেও, আহত যাত্রীদের পরিবারে নেমে এসেছে চরম হতাশা ও অনিশ্চয়তা।
বেপরোয়া গতির পরিসংখ্যান: সড়কজুড়ে যেন মৃত্যুর ফাঁদ!
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এসবি পরিবহনের গতি ছিল মারাত্মক। লোকাল বাসটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকাকালীন পেছন থেকে ধাক্কা মারে। এই ঘটনা স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়, দূরপাল্লার বাসগুলো প্রায়শই গতির নীতি ভঙ্গ করে। বিআরটিএ-এর কাছে জনতার খোঁজ: বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে আপনাদের কাছে কীসের ‘বন্ড’ আছে? কেন দূরপাল্লার বাসে গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করা হয় না?
“সড়ক দুর্ঘটনাগুলোকে আর শুধু ‘দুর্ঘটনা’ বলে চালিয়ে দেওয়া যায় না। প্রতিটির পেছনে চালকের গাফিলতি, আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা এবং প্রশাসনের দুর্বল মনিটরিং-এর একটি বন্ড রয়েছে। ৫০ জন যাত্রী আহত হওয়া মানে, পঞ্চাশটি পরিবার আজ গভীর সংকটে। আইন প্রয়োগে কঠোরতা না এলে সড়কের মৃত্যুমিছিল বন্ধ হবে না।” – খোঁজখবর সম্পাদকীয় কমেন্ট।
কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন কর্তব্যরত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে। ভাগ্য ভালো, কেউ নিহত হননি। তবে কয়েকজনের আঘাত গুরুতর। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ তৎপর রয়েছে।”
সমাধানের পথ: জনতাই বন্ড, জনতাই নজরদারি!
এই পরিস্থিতিতে কেবল চালক বা প্রশাসনের ওপর দোষ চাপিয়ে বসে থাকলে হবে না। জনতা-কে সচেতন হতে হবে। বাস কোম্পানিগুলো যেন তাদের চালকদের সঠিক বিশ্রাম ও প্রশিক্ষণ দেয়, সেই বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। বাসে উঠেই গতি যদি অতিরিক্ত মনে হয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে ৯৯৯-এ ফোন করে অভিযোগ জানানোর মতো পদক্ষেপ নিতে হবে। বেপরোয়া বাস চালকদের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করতে হবে। সড়ক নিরাপত্তার জন্য আমাদের সম্মিলিত ‘বন্ড’ স্থাপন করা জরুরি।
খোঁজ সভা: সড়ক পথে আপনার জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আপনি কতটা চিন্তিত? বেপরোয়া গতি রোধে প্রশাসনের ব্যর্থতা নাকি চালকের অসচেতনতা—কোনটি প্রধান দায়ী?