সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ক্ষিরতলা গ্রামসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের প্রধান সড়কগুলো সামান্য বৃষ্টিতেই হয়ে পড়ে চলাচলের অযোগ্য। ঘোড়ামারা, প্রতাবদিঘি ও বাঁকাই এলাকা থেকে ক্ষিরতলা বাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংযোগ স্থাপনকারী সড়কগুলোতে বছরের অধিকাংশ সময় থাকে কাদা ও জলাবদ্ধতা।
প্রধান তিনটি রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ:
(১) ঘোড়ামারা হতে ক্ষিরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১.৫ কিলোমিটার)
(২) বাঁকাই হতে ক্ষিরতলা বাজার (৩ কিলোমিটার)
(৩) প্রতাপদিঘি হতে ক্ষিরতলা উচ্চ বিদ্যালয় (৩ কিলোমিটার)
এই সড়কপথগুলোর বেহাল দশার কারণে গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না জরুরি সেবাদানকারী যানবাহন যেমন এম্বুলেন্স, সিএনজি বা অটোরিকশা। এমনকি কোনো মৃত ব্যক্তিকে গোরস্থানে নেওয়ার সময়ও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকাবাসীকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুল যাত্রা যেন এক যুদ্ধঃ
কাঁদা আর বৃষ্টির পানিতে গড়ে ওঠা কাদার ভাঁগারে প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে স্কুল ড্রেস, বাধা পাচ্ছে নিয়মিত স্কুলে উপস্থিতি। ক্ষিরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুকুমার রায় বলেন,
“স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত ঘোড়ামারা এবং প্রতাপ দিঘি থেকে বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তার কোনো উন্নয়ন হয়নি। ছাত্রছাত্রীরা প্রতিদিন পড়ে যাচ্ছে, কাঁদায় ভিজে যাচ্ছে—এই কষ্ট আর কতকাল?”
কৃষকদের আর্তনাদঃ
ক্ষিরতলার ঠাকুর পাড়ার বাসিন্দা জীবন চক্রবর্তী জানান, “বাঁকাই থেকে ক্ষিরতলা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা হাঁটু পর্যন্ত কাঁদা হয়ে যায়। এই রাস্তাই মাঠের সব ফসল বাজারজাতকরণের একমাত্র মাধ্যম। ভারি ট্রাকের চলাচলে রাস্তার বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে, কোথাও গর্ত, কোথাও পিচ্ছিল কাদা।”
প্রতিশ্রুতি থাকলেও বাস্তবায়ন নেইঃ
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিটি নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা পাকা রাস্তার প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোটের পরে আর তাদের দেখা মেলে না। এলাকাবাসী একাধিকবার মেম্বার, চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রশাসন এমনকি উপজেলা পরিষদ পর্যন্ত দাবি জানিয়েও কোনো কার্যকর ফল পাননি।
জনস্বার্থে অবিলম্বে হস্তক্ষেপের দাবিঃ
গ্রামবাসীদের মতে, অন্তত শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে ঘোড়ামারা–প্রাথমিক বিদ্যালয়–উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটি দ্রুত পাকা করা প্রয়োজন। জরুরি চিকিৎসা সেবা, কৃষিপণ্য পরিবহন এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াতের স্বার্থে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করছেন এলাকাবাসী।