খুলনা জেলার উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাব, দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা এবং সুপেয় পানির তীব্র সংকট মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ ও বাজেট বরাদ্দের দাবিতে আজ এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা মা সংসদ, ওয়াশ বাজেট মনিটরিং ক্লাব এবং স্বাস্থ্য গ্রাম দল আয়োজিত এই কর্মসূচিতে সহযোগিতা করে অ্যাকশন টু ক্লাইমেট চেঞ্জ এনসিউরিং সাসটেইনেবল সলিউশন (অ্যাকসেস) প্রকল্প, উন্নয়ন সংস্থা ডর্প এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা হেলভেটাস বাংলাদেশ।
মানববন্ধনে বক্তারা কয়রার ভৌগোলিক অবস্থান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সমস্যাগুলোর ওপর জোর দেন। তাঁরা বলেন, কয়রা একটি নদী ও উপকূলবেষ্টিত এলাকা হওয়ায় অতিবৃষ্টি, নদীভাঙন এবং জোয়ার-ভাটার কারণে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা এই অঞ্চলের প্রধান সমস্যা। যদিও এখানে টিউবওয়েলসহ একাধিক পানির উৎস রয়েছে, জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততার কারণে অধিকাংশ টিউবওয়েল অকেজো হয়ে পড়েছে অথবা নিরাপদ পানির মান বজায় রাখতে পারছে না। পাশাপাশি, সরকারি খাস পুকুর ও পিএসএফগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পানির সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। এর ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং নারী, শিশু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে।
বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, “টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ছাড়া কয়রার জলাবদ্ধতা কোনোভাবেই নিরসন সম্ভব নয়। জলাবদ্ধতা থেকে সৃষ্ট স্থায়ী জলাবসান মাটির উর্বরতা নষ্ট করছে এবং এর ফলে আমাদের পানির উৎসগুলোও ধ্বংস হচ্ছে। যদি এই সংকট সমাধানে কার্যকর বাজেট বরাদ্দ ও বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে এই জনপদ নিরাপদ পানির অভাবে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। তাই এখনই সময় বাজেট বৃদ্ধি এবং তার সঠিক ও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করার।”
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ডর্পের উপজেলা কো-অর্ডিনেটর পিন্টু দাস, সিডিও মোঃ মশিউর রহমান, রিজিয়া খাতুন, সুফিয়া, সুমাইয়া, বাজেট মনিটরিং কমিটির সভাপতি মোল্লা মনিরুজ্জামান মনি, ডেপুটি স্পিকার স্বপ্না মন্ডল এবং স্বাস্থ্য গ্রাম দলের ফাল্গুনী রানী প্রমুখ। তাঁরা কয়রার মানুষের মৌলিক অধিকার, বিশেষ করে পানি ও জলবায়ু অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।