খুলনার কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মোঃ গোলাম রব্বানী এবং সদস্য মল্লিক আঃ রউফ-এর বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর ২৫/২৭ ধারায় ‘মিথ্যা’ মামলা দায়েরের ঘটনায় সাংবাদিক সমাজে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। সাংবাদিকদের দাবি, জনৈক এনসিপি নেতার অপকর্ম তুলে ধরায় প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়েই তাদের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে, যা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর চরম আঘাত।
কয়রা থানায় মামলা নং ১৫, তারিখ: ২৯ জুন, ২০২৫ এ দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযোগকারী মোঃ আবু বকর সিদ্দিকের দাবি, অভিযুক্ত সাংবাদিকদ্বয় ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে অশ্লীল স্থিরচিত্র এবং ভিডিও চিত্র প্রকাশ ও প্রচার করে সাইবার অপরাধ করেছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে খুলনা সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক জেলা ও দায়রা জজের আদেশক্রমে মামলাটি রুজু করা হয়েছে।
তবে, কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় সাংবাদিক সমাজের জোরালো দাবি, এই মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা জানান, সম্প্রতি সাংবাদিক মোঃ গোলাম রব্বানী ও মল্লিক আঃ রউফ সহ অনেক পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় একটি সংবাদের মাধ্যমে একজন এনসিপি নেতার বিভিন্ন অপকর্ম জনসমক্ষে তুলে ধরেন। এর প্রতিক্রিয়ায় সেই নেতা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টায় এই মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন।
কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবের এক জরুরি সভায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ শরিফুল আলম, সহ-সভাপতি শিক্ষক আঃ রউফ ও শেখ কওছার আলম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রিয়াছাদ আলী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জিএম নজরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক শিক্ষক অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কোষাধ্যক্ষ মোঃ ফরহাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাহিদুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শিক্ষক মোঃ হাবিবুল্লাহ হাবিব, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক শিক্ষক জিয়াউর রহমান ঝন্টু, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক শেখ জাহাঙ্গীর কবির টুলু, কার্য-নির্বাহী সদস্য মোহাঃ হুমায়ুন কবির, শেখ মনিরুজ্জামান মনু, গীরেন্দ্রনাথ মন্ডল, এবং সদস্য মোস্তফা শফিকুল ইসলাম, মাষ্টার আব্দুল খালেক, গাজী আব্দুস সালাম, প্রভাষক শহিদুল্যাহ শাহিন, শিক্ষক নূরুল আমিন নাহিন, শিক্ষক আবুল বাশার, এইচ এম মুজিবার রহমান, মোঃ আজিজুল ইসলাম, মাসুদ রানা, মিজানুর রহমান লিটন, হাফিজুর রহমান, রবিউল ইসলাম, আরিফুর রহমান, আবু ওবাইদা, জাহিদুল ইসলাম, ফারুক আজম প্রমুখ।
বক্তারা সম্মিলিতভাবে বলেন, “সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণস্বরূপ। তারা সমাজের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপকর্ম তুলে ধরে জাতিকে সচেতন করেন। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর চরম আঘাত।”
তারা অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং অভিযুক্ত সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধের জোর দাবি জানান। সাংবাদিক নেতারা এই ঘটনাকে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকারের ওপর একটি বড় হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।