1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
প্রাণ দিয়ে হলেও আমাদের জন্মভূমি রক্ষা করবো- এ্যাডভোকেট হোসেন সুন্দরগঞ্জে ক্রয় কৃত জমি জোরপূর্বক জবরদখল কারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সুন্দরগঞ্জে মিথ্যা ভিত্তিহীন অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত ত্রিশালে স্বর্ণের পুতুল নিয়ে প্রচারিত সংবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন ময়মনসিংহে এএসআই আয়েছ মাহমুদ এর অভিযানে প্রাইভেটকারসহ ৩ জুয়ারি গ্রেপ্তার নেত্রকোণায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত খুলনার কয়রায় সহস্রাধিক রোগীকে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সোনা মসজিদ স্থলবন্দরে নৌ পরিবহন উপদেষ্টা মিঠাপুকুরে সাংবাদিকদের সাথে শিক্ষক নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় কয়রায় গাঁজাসহ আটক ১, ওয়ারেন্টভুক্ত ৪ আসামি গ্রেপ্তার

খানাখন্দে ভরা সড়ক, দুর্ভোগে কয়রাবাসী: ৪ বছরেও শেষ হলো না ৭ কিমি রাস্তার কাজ

এস এম এ রউফ
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

খুলনার কয়রা উপজেলার দেউয়ারা গোপালের মোড় থেকে উপজেলা সদর পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়ক এখন দুর্ভোগের আরেক নাম। গত সাড়ে চার বছর ধরে চলা সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় খানাখন্দ আর কাঁদায় ভরা এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাজারো মানুষ। বর্ষার কাদা আর শুষ্ক মৌসুমের ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয়দের জীবন।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীনে প্রায় ৬৪ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয়। ৪শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের দায়িত্ব পায় মেসার্স মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ধীরগতি এবং নিম্নমানের কাজের অভিযোগ ওঠে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি ইচ্ছামতো সড়ক খুঁড়ে ফেলে রেখেছে, যার ফলে অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে।
চরম দুর্ভোগে রোগী ও শিক্ষার্থীরা
এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি কামিল মাদ্রাসা, তিনটি কলেজ, হাসপাতাল এবং দুটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। হাসপাতালের রোগী, বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও বৃদ্ধরা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এছাড়া, বর্তমানে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। কয়রা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম জানান, কাদামাখা হয়ে পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে আসছে। কাদা ও ধুলায় পোশাক নষ্ট হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীকে ব্যাগে করে বাড়তি পোশাক নিয়ে যেতে হচ্ছে।
এক শিক্ষার্থী জানায়, “১০ মিনিটের পথ বৃষ্টি হলে এক ঘন্টায়ও পৌঁছানো যায় না। বাধ্য হয়ে ভ্যানে করে যেতে হচ্ছে, এতেও ঘটছে দুর্ঘটনা। গর্তে পড়ে প্রায়ই বইখাতা নষ্ট হয়ে যায়।”
কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা
স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির সময় কাদা পানিতে পোশাক চেনার উপায় থাকে না, আর শুকনো মৌসুমে ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে চলাফেরা করতে হয়। তিনি দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান বলেন, একাধিকবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা হয়নি। কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আ.ব.ম আব্দুল মালেক বলেন, “গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের খামখেয়ালিপনায় মানুষ ৪ বছরের বেশি সময় ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কালো তালিকাভুক্ত
এ বিষয়ে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী তানিমুল হক জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তাদের মেয়াদ শেষ হয়েছে এবং নতুন করে মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। তিনি আরও জানান, অর্থ ছাড় বন্ধ থাকায় ভূমি অধিগ্রহণও সম্ভব হয়নি। তবে ওই প্রতিষ্ঠানকে ইতিমধ্যেই কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং অসমাপ্ত কাজ শেষ না করলে বরাদ্দের টাকা কেটে রাখা হবে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকী আশ্বাস দিয়েছেন যে, জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে এলাকাবাসীর প্রশ্ন, আর কতদিন তাদের এই দুর্ভোগের শিকার হতে হবে? কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পরও কবে নাগাদ এই সড়কের বেহাল দশা দূর হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com