অবিশ্বাস্য সাহস ও দৃঢ় মনোবল নিয়ে গাজীপুরের সন্তান ইকরামুল হাসান শাকিল বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে পায়ে হেঁটে দীর্ঘ ৮৪ দিন পাড়ি দিয়ে পৌঁছেছেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায়। এই অসাধারণ অভিযাত্রায় তিনি গড়েছেন এক অনন্য বিশ্বরেকর্ড এবং হয়েছেন সপ্তম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্টজয়ী।
শৃঙ্গজয়ের আগে কঠিন অভিযোজন
‘সি টু সামিট এভারেস্ট’ অভিযানের অংশ হিসেবে শাকিল ৬ মে রাত ১টায় এভারেস্ট বেসক্যাম্প (৫,৩৬৪ মিটার) থেকে অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ রোটেশনে যাত্রা করেন। এটি মূলত উচ্চতার সঙ্গে শরীরকে খাপ খাওয়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তার সঙ্গে ছিলেন তাইওয়ানের তিনজন পর্বতারোহী ও চারজন অভিজ্ঞ শেরপা গাইড।
রোটেশনের বিস্তারিত পরিকল্পনা ছিলঃ
৬ মে, রাত ১টা: বেসক্যাম্প থেকে যাত্রা।
৭ মে: সকাল ১১টার মধ্যে ক্যাম্প-১ (৬,১০০ মিটার) পৌঁছানো ও রাতযাপন।
৮ মে: ক্যাম্প-১ থেকে ক্যাম্প-২ (৬,৪০০ মিটার) যাত্রা ও রাত্রিযাপন।
৯ মে: ক্যাম্প-২ থেকে ক্যাম্প-৩ (৭,২০০ মিটার) এর নিচ পর্যন্ত উঠে আবার ক্যাম্প-২-এ ফিরে আসা ও রাতযাপন।
১০ মে: ক্যাম্প-২ থেকে ফিরে আসা বেসক্যাম্পে।
এই ধাপে প্রচণ্ড ঠান্ডা, পাতলা বাতাস ও প্রতিকূল আবহাওয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে শরীরকে অভিযোজিত করাই পরবর্তী শৃঙ্গারোহণের জন্য ছিল প্রস্তুতির মূল অংশ।
গর্বের মুহূর্ত
ইকরামুল হাসান শাকিল শুধু একজন অভিযাত্রী নন, তিনি এক অনুপ্রেরণার নাম। বাংলাদেশের সপ্তম ব্যক্তি হিসেবে মাউন্ট এভারেস্ট জয় করে দেশের ইতিহাসে নিজের নামটি চিরস্থায়ীভাবে লিখিয়ে নিয়েছেন।
জাতীয় গর্ব
বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক আজ গর্বিত শাকিলের এই অর্জনে। দেশের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে শুরু করে হিমালয়ের বুকে এভারেস্ট পর্যন্ত তার পদচারণা প্রমাণ করে দিয়েছে—পরিশ্রম, সাহস ও সংকল্প থাকলে কোনো স্বপ্নই অসম্ভব নয়।
আমরা তার নিরাপদ প্রত্যাবর্তন কামনা করি এবং এই দুর্দান্ত সফলতার জন্য জানাই হৃদয় নিংড়ানো অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা।
বাংলাদেশ তোমার জন্য গর্বিত, শাকিল!
তুমি দেখিয়ে দিয়েছো—স্বপ্ন দেখা ও তাকে ছুঁয়ে ফেলা আমাদের পক্ষেও সম্ভব।