1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৫০ অপরাহ্ন

গোয়ালন্দ অনুমোদিত দোকানে অ- অনুমোদন ক্রেতাদের ভীড়

ইলিয়াছ শাহেদ
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দেশী মদের দোকানে নিত্য পণ্যের মতো অবাধে বিক্রি হচ্ছে মদ। প্রতিদিন ভোরে ওই মদের দোকানে মদ কিনতে ক্রেতাদের লম্বা লাইন তৈরী হয়। ক্রয়কৃত মদ পাচারের সময় মাঝে মধ্যেই র‌্যাব, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর ও পুলিশের অভিযানে, ইজিবাইক, মোটর সাইকেল , রিক্সা চালক’সহ বহনকারী’রা গ্রেফতার হলেও ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থেকে যাচ্ছে প্রকৃত অপরাধীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোয়ালন্দ বাজারের আড়ৎপট্রি এলাকায় অবস্থিত সরকার অনুমোদিত রনজিৎ সরকার ও শুকুমার সরকারের দেশী মদের দোকানের সাইন বোর্ডে টিটু সরকার অবাধে পারমিট বা অনুমোদন বিহীন ক্রেতাদের কাছে মদ বিক্রি করছেন। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্রবার ব্যতীত, প্রতিদিন সকাল ১১ টা থেকে বিকেল পর্যন্ত মদ কেনার জন্য ক্রেতারা, লম্বা লাইন দিয়ে সিরিয়াল অনুযায়ী কেউ প্লাস্টিকের বোতল হাতে, কেউ প্লাস্টিকের  ডোপ হাতে, কেউ আবার বস্তার মধ্যে কয়েকটি প্লাস্টিকের ডোপ নিয়ে পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। যা দেখলে মনে হবে, এযেন সাধারণ কোন নিত্যপণ্যের দোকান। এই দোকানে যেকেউ টাকা আর খালি বোতল দিলে তাকেই চাহিদা মত মদ দেওয়া হচ্ছে। লাগছে না মদ কেনার কোন পারমিট বা অনুমোদন। এসব মদ ক্রেতার বেশিরভাগই নেশাঁ খোর ও পতিতা পল্লীর পাইকেরী ও খুচরা মদ বিক্রেতা। এদের কারোই নেই মদ ক্রয়-বিক্রয়ের পারমিট বা অনুমোদন।
স্থানীয়দের অভিযোগ- পারমিট বা অনুমোদন ধারী ব্যক্তি ছাড়া মদ বিক্রি করা নিষেধ থাকলেও গোয়ালন্দে দেশি মদের দোকানে যেকেউ টাকার বিনিময়ে মদ কিনতে পারেন। এতে এলাকার কিশোর ,যুবক, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বৃদ্ধাসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ দিনে দিনে নেশায় আসক্ত হচ্ছে আর নেশার টাকা যোগান দিতে গিয়ে তারা বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে ছিনতাই, ডাকাতি সহ বিবিধ।
এছাড়াও, পাশেই দৌলতদিয়া যৌনপল্লী থাকার কারনেই অনেকই মদ পান করে পতিতাপল্লীতে প্রবেশ করে মাতলামী করে। অতি দ্রুত লাইসেন্সের আড়ালে এই অবৈধ কারবার বন্ধ না করা গেলে দিনে দিনে মাদকাসক্ত হয়ে পড়বে গোয়ালন্দ উপজেলার যুব সমাজ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যৌনপল্লীর এক বাড়ীওলা বলেন, আমি তো আগে মদের দোকান করেছি। সে সময় মদের দাম ছিলো একশো টাকা লিটার তারপর হলো দুইশো টাকা লিটার । বর্তমানে যৌনপল্লীতে পাচঁশত টাকা লিটার মদ বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন,  প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার লিটার মদ যৌন পল্লীতে বিক্রির উদ্দেশ্যে ডুকছে। এছাড়াও বর্তমানে ইনটেক্ট কট মদের বোতল ১৮০০ টাকা করে খুচারা বিক্রি হচ্ছে, যা অন্যান্য জেলাতে ১২০০ টাকা বিক্রি হয়।
এবিষয়ে টিটু সরকারের দেশী মদের দোকানের  ম্যানেজার গোপালের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। পরে বলেন, আমি আপনার সাথে দেখা করে বসতে চাই, বলে ফোনটি কেটে দেন। পরে একাধিক তাকে ফোন দেওয়ায় হলেও তিনি রিসিভ করেনি।
এবিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানা অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে গোয়ালন্দ ঘাট থানা  ইতিমধ্যে অবগত হয়েছে। পারমিট বা অনুমোদন বিহীন অবৈধভাবে কারো কাছে মদ বিক্রয় করা হলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা করা হবে।
আর রাজবাড়ী জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের পরির্দশক (ওসি) আবু বক্কার সিদ্দিক রহমান বলেন, গোয়ালন্দে ৩০০ ব্যক্তির নামে মদ খাওয়ার পারমিট বা অনুমোদন আছে।  যাদের দেশীয় মদ খাওয়ার পারমিট বা অনুমোদন আছে, তারাই শুধু দেশীয় মদের দোকান থেকে মদ কিনতে পারবে। এছাড়া অন্য কারো কাছে বিক্রি করা যাবে না। পারমিট বা অনুমোদন ছাড়া কারো কাছে মদ বিক্রি করলে দেশী মদের দোকান মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, অদৃশ্য কারণে দৌলতদিয়া পতিতা পল্লির মধ্যে  ৫০টিরও অধিক দোকানে পারমিট বা অনুমোদন বিহীন দোকানে প্রকাশ্যে মদ বিক্রি হচ্ছে। নিরব ভূমিকা রাজবাড়ী জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com