1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০২:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ঘোড়াঘাটে যুবলীগের সভাপতি সহ গ্রেপ্তার ২ কালিয়াকৈরে শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার নলছিটিতে ইয়াবাসহ যুবক আটক পদ্মা সেতুর রক্ষা বেরিবাদ ভাঙ্গনের কবলে পদ্মার গর্ভে প্রেম হয়ে যাচ্ছে রাজনৈতিক শক্তির দায়িত্ব হচ্ছে আত্মমর্যাদাশীল, গণতান্ত্রিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা : শিমুল বিশ্বাস নন্দীগ্রামে প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলামের মৃত্যুতে বিভিন্ন মহলের শোক পীরগঞ্জে জমি দখল ও গাছ কর্তনের মামলা করায় প্রতিপক্ষের আতঙ্কে গৃহ ছাড়া যাদের হাতে নিজ দলের নেতা কর্মী- নিরাপদ নয়, তাদের হাতে দেশের ১৮ কোটি মানুষ কিভাবে নিরাপদ থাকবে ———–আলহাজ্ব মাসুদ সাঈদী যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভুয়া চিকিৎসক আটক বানারীপাড়ায় বিএনপি’র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে প্রস্ততি সভা অনুষ্ঠিত

গৌরীপুরে সরকারি গাছ কেটে বিক্রি করে ফেলেন বনবিভাগের ”বড় অফিসার”

মোখলেছুর রহমান, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫
  • ৪৫ বার পড়া হয়েছে
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বনবিভাগের কথিত ‘বড় অফিসার’ এর বিরুদ্ধে শনিবার (৫জুন/২৫) সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ গাছ কাটা হয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের গৌরীপুর-শ্যামগঞ্জ সড়কে। শনিবার সন্ধ্যায় বিক্রিত কাটা গাছ জব্দ করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুনন্দা সরকার প্রমা।
সোমবার (৭ জুলাই/২৫) তিনি বলেন, রাস্তার কাটা গাছ জব্দ করা হয়েছে। এর সাথে কারা জড়িত রয়েছে, তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) গৌরীপুর উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট মো. সাখাওয়াত হোসেন তসলিম জানান, সরকারি গাছ কাটতে দেখে আমি ও এলাকাবাসী আটকে দেই। উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেয়ার পর গাছগুলো জব্দ করে। পরে জানতে পেরেছি উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি ও গৌরীপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. শহিদুল্লাহ এ গাছ কেটে বিক্রি করছিলো।
এদিকে সোমবার (৭ জুলাই/২৫) সরকারি রাস্তার গাছ কাটার চোর সিনিন্ডকেটের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) আহ্বায়ক রিয়াজুল হাসনাত ও যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন তসলিম উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
গাছ কাটার নিয়োজিত শ্রমিক আব্দুল হামিদ, রানা ও মুরাদ হোসেন জানান, মেহেদি স্যার নিয়ে আসছেন। তাদের বাড়ি উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতাপাড়ায়। তারা মেহেদী স্যারের নির্দেশে গাছ কাটছেন। এ দিকে মেহেদি হাসানের বিরুদ্ধে গৌরীপুর কলতাপাড়া সড়ক, শাহগঞ্জ সড়ক, শ্যামগঞ্জ সড়ক ও বন বিভাগের সাথে দেয়ালঘেঁষে থাকা গাছসহ শতাধিক গাছ কেটে বিক্রির জনশ্রুতি রয়েছে। গাভীশিমুল গ্রামের মৃত আবাল হোসেনের পুত্র আমির উদ্দিন, কসুম উদ্দিনের পুত্র মিজবাহ উদ্দিন, বসির উদ্দিন মুনশীর পুত্র সুরুজ ও নেকবর আলীর পুত্র আবুল হাসিম জানান, বনবিভাগের পোশাক পরিহিত লোকজন এসে গাছ কাটতে দেখেছি। গাছ যারা কাটছে তাদের বাড়ি কলতাপাড়া বলে জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম জানান, এ ঘটনা মাত্র জানলাম। জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। বনবিভাগের সহকারী বন কর্মকর্তা মো. সাদেকুল ইসলাম খান জানান, বিক্রির ঘটনায় মেহেদী হাসান রনি জড়িত থাকার বিষয়টি জেনেছি। তার বিরুদ্ধে বন আইন ১৯২৭ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কি ব্যবস্থা নেয়া হলো, তা অচিরেই জানতে পারবেন।
এ প্রসঙ্গে গৌরীপুর এসএফএনটিসির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান জানান, বনপ্রহরী মেহেদী হাসান রনি অবৈধভাবে ৩টি গাছ কর্তন করে সাড়ে ১৬হাজার টাকায় বিক্রির বিষয়টি সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে এ বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নিকট লিখিত তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনা আর কেউ জড়িত নয়।
গাছকাটা প্রসঙ্গে উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের আব্দুল আলীর পুত্র লাল মিয়া বেপারী জানান, বনবিভাগের লোক আমাকে মোবাইলে কল দিয়ে গাভীশিমুল নিয়ে যায়। সেখানে ২নং গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মো. শহিদুল্লাহ’র উপস্থিতিতে গাছের দাম নির্ধারণ করা হয়। প্রথম ১৫হাজার টাকা আমি মেম্বারের নিকট দেই, সে টাকা আমার সামনেই বনবিভাগের বড় অফিসারের (বন প্রহরী মেহেদী হাসান রনি) নিকট দিয়ে দেন মেম্বার। ওই মেহেদী স্যারের নিকট পরে আরও ১৫শ টাকা আমি দিয়েছি।
তিনি জানান, যারা গাছ কাটছিলো হামিদ ও রানা। আমাকে বলেছে তিনি (মেহেদী হাসান রনি) বনবিভাগের ‘বড় অফিসার’। উনার গাছবিক্রির অধিকার আছে। আমি বারবার বলেছি, আমি যেনো কোনো বিপদে না পড়ি। তারপরে তারা আমাকে বলেছে গাছ কেটে আমার এখানে পাঠিয়ে দিবে।
লাল মিয়া বেপারী এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, গাছসহ আমাকে উপজেলায় নিয়ে আসে। দুতলা থেকে মেডাম (সহকারী কমিশনার ভূমি) বলছে ১০মিনিটের মধ্যে উনার টাকা ফেরত দাও। এরপরে মেহেদী আমার হাতে প্রথমে ১৫হাজার টাকা ও পরে আরেকজনের নিকট থেকে এনে ২হাজার টাকা দিয়েছে। গাছ আনা-নেয়ার পরিবহন খরচে আমার আরও ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ জানান, বনবিভাগের কর্মকর্তা (কথিত) মেহেদী হাসান রনি আমার সামনে লাল মিয়া বেপারীর সাথে গাছের দরদাম করেন। তিনি উপস্থিত সবাইকে বলেছেন, ঝড়েপড়ে যাওয়া এ গাছ কাটার পারমিশন আছে। গাছের দাম ১৬হাজার ৫শ টাকা নির্ধারিত হয়। আমার নিকট বেপারী টাকা গুণে দেয়ার জন্য ১৫হাজার টাকা দেয়। তাৎক্ষনিক সেই টাকা সবার সামনেই বনকর্মকর্তার নিকট দিয়ে দেই। এ টাকা গণনা করাই ছিলো আমার অপরাধ! তিনি আরও বলেন, আমি গাছ কাটিও নাই বা গাছ বিক্রিও করি নাই। আমি রাজনীতি করি এবং জনপ্রতিনিধিও। প্রতিপক্ষরা আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করতেই অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ দিকে গৌরীপুর বনবিভাগের বনপ্রহরী মেহেদী হাসান রনি’র সাথে মুঠোফোনে কল দেয়া পর বলেন তিনি অফিসে আসেন। এক মিনিটের মধ্যে এ প্রতিনিধি উপস্থিত হলে অফিসের সামনে জুতা রেখে তিনি লাপাত্তা হয়ে যান।
এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com