ছুটির দিনগুলোতে আমরা চাঙা হতে চাই। ভাবি, আহ্! আজ শুধুই বিশ্রাম নেব। চুটিয়ে ঘুমাব। তারপর একেবারে তরতাজা হয়ে আবার কাজে নেমে পড়ব। সব ক্লান্তি ধুয়ে–মুছে যাবে। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, ছুটির দিনে আমরা যেন আরও ক্লান্ত হয়ে পড়ি। শরীর আরও নিস্তেজ লাগে। চোখ ঘুমে জড়িয়ে আসতে চায় বারবার। এর কারণটা কী? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন গবেষকেরাও। এবং গবেষণার পর কিছু বিষয়ে হয়েছেন একমত। কী সেসব?
ছুটির দিনে আমাদের দৈনন্দিন রুটিন বদলে যায়। যেমন পরদিন স্কুল বা অফিস নেই বলে আগের রাতে আমরা বেশি সময় জেগে থাকি, বাইরে খেতে যাই বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে আড্ডা দিই। কখনো রাত জেগে টিভি বা সিনেমা দেখি। বায়োলজিক্যাল ক্লক বা দেহঘড়ির ছন্দপতন হয়। পরদিন বেশ বেলা পর্যন্ত ঘুমালেও তাই ঘুমের রেশ কাটে না।
ঘুম অনেকটা খাদ্যাভ্যাসের মতোই—এমনই মত ঘুমবিশারদদের। খাবারের সময়সূচিতে আকস্মিক পরিবর্তনে যেমন শরীর খারাপ লাগে, ঘুমের বেলায়ও তাই। সে কারণে চেষ্টা করবেন ছুটির দিনেও রুটিনের বড় ধরনের ব্যত্যয় না করতে। সকালে না হয় অন্যদিনের তুলনায় এক ঘণ্টা বেশি ঘুমালেন, তার বেশি নয়।
আমরা সব কাজ ছুটির দিনের জন্য জমা করে রাখি। চাকরিজীবীদের জীবনে সপ্তাহের শেষে ছুটির দিনটা যেন আরও ব্যতিব্যস্ততায় পূর্ণ। চেষ্টা করুন সপ্তাহজুড়েই সংসার ও ব্যক্তিগত কাজ একটু একটু এগিয়ে রাখতে। ছুটির দিনটাতে কাজ করলেও রিল্যাক্স থাকার চেষ্টা করুন।
দেখা যায়, ছুটির আগের দিন বা ছুটির দিনে খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন হয়। ভালোমন্দ রান্না হয়, বাইরে খাওয়া হয়। কখনো নিমন্ত্রণ থাকে। তেল–চর্বিযুক্ত খাবার খেয়ে পেটে দেখা দেয় নানা সমস্যা। তাই খারাপ লাগে। এ সমস্যা এড়াতে এক বেলা নিমন্ত্রণ বা বাইরে খাবারের কথা থাকলে অন্য বেলা হালকা খাবার রাখুন। বেশি খাবেন না। আর বেশি দেরি করেও খাবেন না।
নিত্যদিনের ব্যায়ামও অনেক সময় বাদ হয়ে যায় ছুটির দিনে। তাই ছুটির দিনে ব্যায়ামে একটু বৈচিত্র্য আনতে পারেন। হাতে যথেষ্ট সময় থাকে বলে এদিন হয়তো সাঁতার কাটতে গেলেন বা যোগব্যায়াম করলেন। অথবা বাগানে কাজ করে ক্যালরি ক্ষয় করলেন।
ছুটির দিনেই আমরা সুযোগ পাই দুপুরে বা বিকেলে আরেকবার বিছানায় গড়িয়ে নেওয়ার। এই বাড়তি ঘুমের কারণে আবার রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। পরবর্তী দিনে পড়ে এর মন্দ প্রভাব। তাই অভ্যাস না থাকলে বিকেলে ঘুমাবেন না। আর ঘুমালেও আধা ঘণ্টার বেশি নয়।