পটুয়াখালীর গলাচিপায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চাচার হাতে নিহত হয়েছেন শামিম মিয়া (৩০)। এ ঘটনায় এজাহারনামীয় পলাতক চার আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
ঘটনার পর র্যাব-৮, সিপিসি-১, পটুয়াখালী ক্যাম্প আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে এবং পাবনায় তাদের অবস্থানের তথ্য নিশ্চিত করে র্যাব-১২, সিপিসি-২, পাবনাকে অবহিত করে। পরে, র্যাব-১২ পাবনা জেলার সদর উপজেলার ভাড়ারা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ বিকেল ৫টায় চার আসামিকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন: ১) মো. কুদ্দুস শিকদার (৫৫), পিতা: ইসমাইল শিকদার। ২) মোছা. রেহানা বেগম (৪৮), স্বামী: মো. কুদ্দুস শিকদার। ৩) মো. এনামুল (২২), পিতা: মো. কুদ্দুস শিকদার। ৪) মোছা. সুখী বেগম (২৫), পিতা: মো. কুদ্দুস শিকদার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কুদ্দুস শিকদার ও অজেদ সিকদারের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। অজেদ সিকদার আদালতের মাধ্যমে উক্ত জমিতে ঘর নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা (১৪৪ ধারা) চেয়ে আদেশ জারি করেন। তবে কুদ্দুস শিকদার আদালতের আদেশ অমান্য করে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ শুরু করলে অজেদ সিকদার থানায় অভিযোগ জানান। পুলিশ এসে ঘর তোলার কাজ বন্ধ করলেও কুদ্দুস শিকদার নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আবারও ঘর তুলতে গেলে বিরোধ বাধে। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বিকেল ৪টার দিকে গলাচিপা উপজেলার রতনদী তালতলী ইউনিয়নের গ্রামারোদন গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, কুদ্দুস শিকদার, তার ছেলে এনামুল সিকদার ও স্ত্রী রেহেনা বেগম লাঠিসোঁটা ও কোদাল নিয়ে অজেদ সিকদারকে আক্রমণ করেন। বাবাকে বাঁচাতে ছুটে আসেন তার দুই ছেলে শামিম মিয়া ও রেজাউল ইসলাম। তখন তাদেরও এলোপাতাড়ি মারধর ও কোপানো হয়। এতে তিনজনই গুরুতর আহত হন। আহতদের গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে শামিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে ১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৭টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত শামিম একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন। তার মৃত্যুর ফলে তার দুই নাবালক সন্তান জুনায়েদ (৪) ও জুম্মান (দেড় বছর) এতিম হয়ে যায়। অন্যদিকে, রেজাউল ইসলাম ও অজেদ সিকদার এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা পলাতক ছিল। তবে র্যাবের অভিযানে চারজন আসামিকে গ্রেফতার করে পাবনা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।