1. admin@desh-bulletin.com : নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক প্রতিদিনের অপরাধ
সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ১২:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বগুড়া গাবতলী দূর্গাহাটায় কুড়িয়ে পাওয়া শিশু শিম্মিকে টিএমএসএসের শিশু সদনে প্রেরণ তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুরে গনপদযাত্রা মতলবে গাঁজা সহ ০১ মাদক ব্যবসায়ী আটক ডোমারে স্কাউটসের তিন তলা ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ডোমারে খালেদা জিয়ার ভাগ্নে তুহিনের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত ঈশ্বরদীতে আলোচিত ধর্ষন মামলার আসামিকে গ্রেফতার করলো র‍্যাব দেশি স্টার্টআপ ফাস্ট পাওয়ার টেক পেল চীনা বিনিয়োগ আজ বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস জানেনা অনেক গণমাধ্যম কর্মী উল্লাপাড়ায় বিএনপির নেতাদের পদ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন ইসরায়েল বিমানঘাটিতে হুথিদের ক্ষেপনার্স হামলা; বন্ধ সব ধরনের ফ্লাইট

ঢাকা মহানগরের ভূমিকম্প ঝুঁকি: বর্তমান বাস্তবতা ও ভূমি ব্যবহারের চ্যালেঞ্জ

মোঃ মাহামুদুর রহমান
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৩ মে, ২০২৫
  • ১৫২ বার পড়া হয়েছে

ভূমিকম্প হল জটিল প্রাকৃতিক ঘটনা যা প্রায়শই অপ্রত্যাশিত এবং সামান্য সতর্কতার সাথেও ঘটতে পারে। এর প্রভাব আমাদের অবকাঠামোর স্থিতিস্থাপকতার সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। মায়ানমারে সাম্প্রতিক ভূমিকম্প এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশে অনুভূত কম্পন আমাদের ভূমিকম্পের প্রস্তুতি পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ করে দিয়েছে। এই বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (বা.স্থ.ই১ মে২০২৫ তারিখে সন্ধ্যা ৬:৩০টায় রাজধানীর IAB সেন্টারে, ভূমিকম্প ঝুঁকি বিবেচনায় ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা এবং ঢাকার ভূমিকম্প সহনশীলতা” শীর্ষক একটি গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার এবং প্যানেল আলোচনার আয়োজন করে।

এই সেমিনারের লক্ষ্য ছিল স্থাপত্য, প্রকৌশল, নগর উন্নয়ন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত পেশাদারদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা, সমন্বিত চিন্তাভাবনার প্রয়োজনীয়তা বোঝা এবং  একটি সহনশীল ও বাসযোগ্য শহরের ভিত্তি স্থাপন করা। দেশের প্রখ্যাত স্থপতি, কাঠামোগত প্রকৌশলী, নগর পরিকল্পনাবিদ, ভূতাত্ত্বিক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পেশাদাররা এই সেমিনারে আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারে, রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী (পিএলআর), ড. আব্দুল লতিফ হেলালী “বৃহত্তর ঢাকায় ঝুঁকি-সংবেদনশীল ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনার ব্যবহারিক অনুশীলন” নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি ডিএমডিপি এলাকার জন্য তৈরি একটি “রিস্ক সেন্সিটিভ আরবান ম্যাপ” উপস্থাপন করেন, যার মধ্যে ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন, রিস্ক সেনসিটিভ আরবান ডিজাইন ও আরবান প্ল্যানিং, ভালনারেবিলিটি এসেসমেন্ট ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই ম্যাপ তৈরিতে, ১,৮২৫টি স্থানের মাটির নমুনা বিশ্লেষণ করা হয় এবং ঢাকাকে ছয়টি অঞ্চলে বিভক্ত করে ৩,২৫২টি ভবনের ঝুঁকি মূল্যায়ন করা হয়। ৩০% এর কম রেট্রোফিটিং খরচ সহ ভবনগুলি রাখা যেতে পারে,  যেখানে ৪২টি রেকটফিটিং এর জন্য উচ্চ মূল্য প্রয়োজন এমন ভবন ধ্বংস করা হতে পারে বলে তিনি জানান। তবে, ঐতিহাসিকভাবে তালিকাভুক্ত ভবনগুলি খরচ নির্বিশেষে সংরক্ষণ করতে হবে। ড. হেলালী এই মানচিত্রটি দ্রুত DAP এর সাথে একীভূত করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন, প্রয়োজনে DAP পরিবর্তন করে হলেও।

এটিএম আসাদুজ্জামান, ভূতাত্ত্বিক, প্রধান উপদেষ্টা, বিজিআর জার্মানি (ঢাকা) বলেনঃ আমরা আমাদের পায়ের নিচের অংশগুলো অনেক সময়ই দেখিনা, বিজ্ঞানও ঠিক তেমনই একটি বিষয়। অনেকেই আমরা দেখিনা, দেখতে চাইনা বা বুঝিনা। কাঠামোগত প্রকৌশলীরা ফাউন্ডেশন বানায় আর সেই ফাউন্ডেশন যে মাটিতে বসবে সেই মাটি নিয়ে কাজ করে ভূতত্ত্ববিদরা। অথচ আমাদের কাজের কোনো সুযোগ নেই এই সেক্টরে। ফাউন্ডেশন বানায় সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা, তারপরের কাজ হলো প্লানারদের, তারপর আসে স্থপতিদের হাতে, এবং কাজটি আবার শেষ হয় প্রকৌশলীদের দ্বারা। আমাদের জিওলজি হলো একটি সাইন্টিফিক ফিলোসফি যা সবাইকে নিয়েই শেষ করতে হবে।

অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, বুয়েট বলেনঃ ভূমিকম্প সহনীয় ভবনের জন্য শুধু ভবন সেফটি নয়, ভবনের নিচের মাটি নিয়েও কাজ করতে হবে। আমাদের দেশের যে মাটিগুলো সফ্ট, বা লুজ সয়েল, সেই স্থানে বিশেষ ভাবে সয়েল ডেভেলপমেন্ট করে তারপর ভবন বানাতে হবে। ভূমিকম্প সহনশীলতার জন্য ব্যাংককের ভবনগুলো অনেক ভালো। আমাদের ভবনগুলোর জন্য থার্ডপার্টি এসেসমেন্ট দরকার।

অধ্যাপক ড. আখতার মাহমুদ, নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, আলোচনাতে বলেন – ঢাকার জন্য যত সব এসেসমেন্ট হচ্ছে, এবং এর রেজাল্ট নিয়ে কথাবার্তা চলছে তার সবকিছুই একটি ধারণা মাত্র। ভূমিকম্প হয়ে গেলে কি করা উচিৎ রিকোভারি করার জন্য তা নিয়ে কাজ করা দরকার। যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি ঠিক করা না যায় তাহলে ভূমিকম্পের পরবর্তী উদ্ধার কাজ চালানো কষ্টসাধ্য বলে জানান তিনি। BNBC সহ এমন অনেক আইন রয়েছে বর্তমানে যা বাস্তবায়ন হয়না বলে আমাকে দাওয়াত দিলে ওই মিটিংগুলোতে যাইনা।

ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম (টিডিএম) তার আলোচনা শুরু করেন বেশ কয়েকটি মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপন করে: “আমরা কি সত্য এড়াতে চাইছি?” যারা নির্মাণ প্রকল্পে প্রচুর সম্পদ বিনিয়োগ করেন তাদের অন্তর্দৃষ্টি কি আমরা উপেক্ষা করতে পারি? তিনি জলসিঁড়ি প্রকল্পের উদাহরণ তুলে ধরেন এবং জিজ্ঞাসা করেন যে – “৮০ ফুট গভীরতার জন্য প্রণীত নকশাটি ১২০ ফুট গভীরতার জন্য প্রযোজ্য কিনা।” তিনি উল্লেখ করেন – যখন ভূমিকম্প-প্রতিরোধী নির্মাণের জন্য বিবেচনাগুলি নকশায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তখন ভবনের সাথে সম্পর্কিত খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়, যা ক্লায়েন্টরা প্রায়শই দিতে চাননা। ফলস্বরূপ, অনেক নকশা এই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা ছাড়াই কার্যকর করা হয়। প্রতিটি নকশার সাথে সাত থেকে আট পৃষ্ঠার নোট থাকে যা প্রায়ই পড়া হয়না। তদুপরি, মাঠ পর্যায়ে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ারদের প্রায়শই নকশার স্পেসিফিকেশন সম্পর্কে ব্যাপক ধারণার অভাব থাকে। আমাদের অবশ্যই একটি সহযোগিতামূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জড়িত হতে হবে যাতে এই ক্ষেত্রের সমস্ত প্রাসঙ্গিক পেশাদারদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

অধ্যাপক ড. রাকিব আহসান, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, বুয়েট জানানঃ নতুন ভবনের জন্য BNBC অনুসরণ করতে হবে। ভূমিকম্প সহনীয় ভবন নির্মাণের জন্য কলাম ও বিমের জয়েন্টগুলো যথাযত হওয়া দরকার। স্থাপত্য নকশা প্রণয়নের সময় সফ্টস্টোরির বেপারটা মাথায় রেখে নকশা প্রণয়ন করা ভালো। আর রেকটফিটিং এর ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ঢাকা শহরের সকল ভবন রাতারাতি নিরাপদ করে ফেলা যাবেনা, কারণ এত ব্যাপক খরচ ঢাকার নাগরিকগণ বহন করতে পারবেনা। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকা উচিৎ।”

স্থপতি প্যাট্রিক ডিরোজারিও, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সিন্থেসিস আর্কিটেক্টস, উচ্চ ভবনের ভূমিকম্প প্রতিরোধী নকশা: কর্মক্ষমতা মানদণ্ড এবং কাঠামোগত অপ্টিমাইজেশন বিষয়ে স্বচিত্র আলোচনা করেছেন। তিনি তার উপস্থাপনায় বলেন: একটি ভূমিকম্প-প্রতিরোধী ভবন ডিজাইন করতে, একজন ডিজাইনারকে কাঠামোগত এবং অ-কাঠামোগত উভয় উপাদান নিয়ে কাজ করতে হবে। স্থপতিদের ডিজাইনের সময় ভবনের শেপ ও সফ্টস্টোরীর সম্পর্কে চিন্তা করতে হবে। U-আকৃতির বা L-আকৃতির ফর্মগুলির সাথে কাজ করার সময়, কিছু বিচ্ছেদ প্রদান করে ভূমিকম্পের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। কখনও কখনও, আমরা স্থপতিরা বিভিন্ন মেঝে এবং দেয়ালে পাঞ্চ ডিজাইন করি। এটি ডিজাইন করার সময়, আমাদের প্লাস্টিক জোন এবং ইলাস্টিক জোন বুঝতে হবে। সার্ভিস ভবনগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা উচিত যাতে দুর্যোগের সময় ভবনটি নিজেই নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়না যা সাধারণের আশ্রয় স্থল হিসেবে কাজ করবে।

প্রশ্ন-উত্তরের পালা শুরু হলে প্রাক্তন প্রধান স্থপতি ও বা.স্থ.ই র প্রাক্তন সভাপতি স্থপতি জনাব কাজী নাসির বলেন- ভূতাত্ত্বিক গবেষণায় আপনারা বলেছিলেন একসময়, ঢাকা শহরের রমনার মাটি ভালো, বণশ্রী আর এয়ারপোর্টের মাটি খারাপ। আমরা দেখি এই সকল খারাপ মাটিতেই বালু ভরাট করে পরিকল্পিত আবাসন ব্যবসা চলছে। একসময় বিল্ডিং কোডে ৮” x ১২” কলাম করা যেত যা এখন মেনে নেয়া হচ্ছেনা। ওই কলামগুলো এখন রেকটফিট করার জন্য যদি সরকার লোনের ব্যবস্থা করতো তাহলে অনেকেই রাজি হতো নিরাপত্তার স্বার্থে। কিন্তু কোনো লোন না দিয়ে গয়রহ ভাবে ভেঙে ফেলার কথা বলা ঠিক হচ্ছেনা। আমরা রাস্তা বড় করার কথা বলি কিন্তু করিনা, দুর্যোগের কথা DAP এ বলা নাই, তারপরও DAP পরিবর্তন করে যা যা নাই তা সংযোজনের জন্য রাজউককে চাপ দেইনা। এই কাজগুলো করলে হয়তো ঢাকা আরো নিরাপদ হতো দুর্যোগের ঝুঁকি থেকে।

স্থপতি জনাব সাইদুজ্জামান (রোজেন) তার জাপানে ভূমিকম্প সহনীয় নিরাপত্তা বিষয়ক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন বাংলাদেশে এই ব্যাপারগুলো নিয়ে আমরা কেন কোনো কাজ করিনা।

স্থপতি ও পরিবেশবিদ জনাব মাহামুদুর রহমান পাপন দুটি সম্পূরক প্রশ্ন করেন যার প্রথমটি ছিল- “ঢাকা শহরের চতুর্দিকে নদী দিয়ে ঘেরাএই নদীগুলো ভূমিকম্পের ওয়েভের তীব্রতা কমিয়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় ঢাকাকে ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে কোনো অবদান রাখবে কিনা?” কিন্তু তার এই প্রশ্নের কোনো উত্তর আলোচকরা দিতে পারেননি বা দিতে চাননি। তার দ্বিতীয় প্রশ্নটি ছিল বুয়েটের সিভিল বিভাগের এক্সপার্টদের কাছে যে “আমরা থার্ডপার্টি এসেসমেন্ট নিয়ে এত কথা বলিআমরা কি আসলে এসেসমেন্ট‘ চাইনাকি থার্ডপার্টি এসেসমেন্ট‘ চাই?” বা.স্থ.ই ‘র ২৬তম নির্বাহী পরিষদের সভাপতি স্থপতি ড. আবু সাঈদ এম. আহমেদের উপস্থিতিতে এই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। তার এই প্রশ্নটির উত্তরটি  পরবর্তীতে বা.স্থ.ই ‘র সভাপতি নিজেই দিয়েছিলেন – ডিজাইনার নিজেই টীম নিয়ে এসেসমেন্ট করুক বা থার্ডপার্টি দিয়ে এসেসমেন্ট করাকেআমাদের নির্মাণের সময় ও নির্মাণ পরবর্তী অকুপেন্সি সনদ গ্রহণের আগে এই এসেসমেন্ট অত্যন্ত জরুরী।”

স্থপতি তিতাস (ভিত্তি) বলেনঃ আমরা গ্রীড ভেঙে ডিজাইন করতে পছন্দ করি। একটি ডাবল হাইট স্পেসে বিমটি বাদ দেয়ার জন্য স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারদেরকে চাপাচাপি করি। এর কি কোনো সমাধান আছে? আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যদি বিদ্যমান ভবনকে রেকটফিটিং করতে পারি, তাহলে নতুন ভবন বানাতে যে কার্বন নিঃস্সরণ হয় তা থেকে পৃথীকে বাঁচাতে পারবো। এখনই সময় এসেছে আমাদের এই ব্যাপারগুলো নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার।

বা.স্থ.ই সভাপতি আলোচনার পরবর্তীতে সকল অংশগ্রহণকারীদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন নগর উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক (অবসরপ্রাপ্ত), স্থপতি ও পরিকল্পনাবিদ ড. খুরশিদ জাবিন হোসেন (তৌফিক) এবং সমন্বয়ক হিসেবে ছিলেন বা.স্থ.ই ‘র ২৬তম নির্বাহী পরিষদের সম্পাদকসেমিনার ও সম্মেলন, স্থপতি সাঈদা আখতার।

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© দেশ বুলেটিন 2023 All rights reserved
Theme Customized BY ITPolly.Com