বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশনের বর্তমান এডহক কমিটির এক সদস্য জনাব নুরুদ্দিন হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তিনি একদিকে বাংলাদেশ আনসার এর ভাতাভূক্ত সক্রিয় খেলোয়াড় হিসেবে জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে, অন্যদিকে ফেডারেশন এর নীতিনির্ধারণী সদস্য পদে দায়িত্ব পালন—এ দুই ভূমিকায় তার অবস্থান “জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন” ও ক্রীড়া নীতিমালার সরাসরি লঙ্ঘন বলেই দাবি করেছেন এক অভিযোগকারী।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ২৩ এপ্রিল ২০২৫ইং তারিখের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গঠিত তায়কোয়ানডো ফেডারেশনের এডহক কমিটির সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান আনসার ও ভিডিপি দলের তায়কোয়ানডো খেলোয়াড় জনাব নুরুদ্দিন হোসেন। অথচ, অভিযোগ ও প্রমানাদি অনুযায়ী, তিনি ২১তম জাতীয় সিনিয়র/জুনিয়র তায়কোয়ানডো চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪-এ আনসার দলের হয়ে ২৪-২৭ বছর বয়সী পুরুষ পুমসে বিভাগে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সংশ্লিষ্ট বিধিমালায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে—“কোনো সক্রিয় খেলোয়াড় ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটি বা নীতিনির্ধারণী পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।” এরূপ দায়িত্বপালন স্বার্থের সংঘাতের পর্যায়ে পড়ে, যা স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও ন্যায়ের পরিপন্থী। এতেই শেষ নয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, জনাব নুরুদ্দিন হোসেন ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত ফেডারেশনের অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপ “Bangladesh Taekwondo Federation Official Group” কে ১৯ জুন ২০২৫ইং তারিখে দখল করে তার নাম পরিবর্তন করে “Bangladesh Taekwondo Association Official Group” করেছেন।
অভিযোগ ও প্রমানাদি অনুযায়ী, এই কাজে তার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মোঃ উত্তম এবং বিতর্কিত সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল ইসলাম রানা। ফেসবুক গ্রুপটি ছিল জাতীয় ফেডারেশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল সম্পদ, যা খেলোয়াড়, কোচ, রেফারি ও সদস্যদের যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ব্যবহৃত হতো।এই নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি সরকারি ক্রীড়া ফেডারেশনের পরিচয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে
একজন ক্রীড়া আইনজীবী বলেন : এটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০১৮ এবং দণ্ডবিধির (Penal Code) ৪০৫ ও ৪২০ ধারা অনুযায়ী জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশন এর সাথে প্রতারণার শামিল।
ফেডারেশন এর সাধারণ সম্পাদক বরাবর অভিযোগকারীর প্রেরিত অভিযোগপত্রে তিন দফা দাবিও উত্থাপন করা হয়েছে: জনাব নুরুদ্দিন হোসেনকে অবিলম্বে এডহক কমিটি থেকে অপসারণ করতে হবে, বিষয়গুলি তদন্ত করে ফেডারেশন ও ক্রীড়া পরিষদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ ও ভবিষ্যতে এ ধরনের স্বার্থের সংঘাত প্রতিরোধে কঠোর নীতি গ্রহণ। ক্রীড়া সংগঠকরা বলেন , এখন পর্যন্ত ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে তা হবে রাষ্ট্রীয় ক্রীড়া ফেডারেশনের স্বচ্ছতা ও মর্যাদার ওপর বড় ধরনের আঘাত।