সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার কয়ড়া ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের দুই মেধাবী শিক্ষার্থী রিপন হোসেন ও ইমন হোসেন দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ অর্জন করেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ ইউনিটে মেধাতালিকায় এবং খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিভাগেও সুযোগ পেয়েছেন রিপন। বড় ভাই ইমনও গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন। কিন্তু টানাপড়েনের সংসারে উচ্চশিক্ষার খরচ চালানো তাদের পরিবারের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রায় পাঁচ বছর আগে তাঁদের বাবা মিন্নত আলী মারা যান। তখন থেকেই রিপন ও ইমন লেখাপড়ার পাশাপাশি দিনমজুরের কাজ করে কোনোমতে সংসার চালিয়ে আসছেন। কখনও রাজমিস্ত্রির সহকারী, কখনও কৃষিকাজে যুক্ত থেকে তাঁরা পড়াশোনার খরচ সংগ্রহ করেছেন। কোচিং করার সুযোগ না থাকলেও বন্ধুর কাছ থেকে নোট সংগ্রহ করে পড়াশোনা চালিয়ে যান রিপন ও ইমন। তাঁদের এই অনুকরণীয় সংগ্রামের গল্প সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিষয়টি সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চুর নজরে আসে। তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জানালে তাঁর নির্দেশে এই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেন। রবিবার (১ জুন) তিনি সরাসরি চরপাড়া গ্রামে গিয়ে রিপন ও ইমনের বাড়ি পরিদর্শন করেন এবং পড়া লেখার খোঁজ খবর নেন। পরিবারের কষ্টের বাস্তব চিত্র দেখে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং শিক্ষার্থীদের মায়ের হাতে নগদ অর্থ সহায়তা তুলে দেন। পাশাপাশি ভবিষ্যতেও ব্যক্তিগত ও দলীয়ভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, “এই দুই ভাইয়ের সংগ্রাম সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমি গর্বিত। আমাদের দায়িত্ব, যেন মেধা অভাবের কাছে হার না মানে।” সরকারি আকবর আলী কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বুলবুল আহমেদ বলেন, “রিপন ও ইমন অনেক কষ্ট করে আজকের অবস্থানে এসেছে। তারা সহায়তা পেলে অনেক দূর যেতে পারবে।” রিপন ও ইমনের মা বেহুলা খাতুন বলেন, “আমার ছেলেরা ছোটবেলা থেকে কাজ আর পড়াশোনা একসাথে করে আসছে। আজ কেউ পাশে দাঁড়িয়েছে, এটাই বড় স্বস্তি।” সমাজের সচেতন ও সামর্থ্যবানদের প্রতি এই পরিবারের আকুতি—“তারা যেন আর্থিক সহায়তা পায়, যেন উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন থেমে না যায়।