নেত্রকোনার দুর্গাপুরে সীমান্তবর্তী অন্তত ৫টি গ্রাম নিয়ে অবস্থিত উত্তর ফারাংপাড়া সরকারি প্রাথমিক স্কুল। আশপাশের শিক্ষার্থীদের কাছে এই একটি স্কুলই শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র হিসাবে দেখছে স্থানীয়রা। বিদ্যালয়টি উন্নয়নে গত বছরের মাঝামাঝি এক কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনতলা বিশিষ্ট ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হলেও বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত জটিলতায় আটকে গেছে স্কুলের নির্মাণ কাজ। ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। তবে অবকাঠামোগত উন্নয়নের অভাবে দিন দিন কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। অনেকে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে দুর-দূরান্তে পাঠদান নিলেও সীমান্তের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর একমাত্র ভরসা এই স্কুল টি।
স্কুলটিকে বাঁচাতে স্থানীয়রা নতুন আরেকটি জায়গা নির্ধারণ করলেও নির্মাণ কাজ নিয়ে দেখা দিয়েছে জটিলতা। আগের টেন্ডার বাতিল হওয়ায় অনিশ্চয়তায় পড়েছে স্কুলের নির্মাণ কাজ। সীমান্তের এই বিদ্যালয় থেকে অন্য একটি বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটারের উপরে। যেখানে যেতে শিক্ষার্থীদের গুনতে হয় বাড়তি অর্থ। তাই ব্যয়ের বোঝা কমাতে নতুন জায়গায় দ্রুতই নতুন ভবন নির্মাণের দাবি স্থানীয় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিউলি সোম জানান, ২০১৯ সালে এই বিদ্যালয়ের জন্য নতুন ভবন বরাদ্দ হয় এই কাজ শুরু হতে হতে ২০২৩ সাল হয়ে যায়। গত বছরের মাঝামাঝি সময় নতুন ভবনের মালামাল বিদ্যালয়ে আসে। ঠিকাদার ও শ্রমিকরাও বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি খুড়ে নির্মাণ কাজও শুরু করে। কিন্তু এর মাঝেই সীমান্ত জটিলতায় বিষয়টি সামনে এনে বিজিবি কাজে বাঁধা দেয়। এর পর থেকেই কাজ বন্ধ রয়েছে। এমনি আমাদের নিজ খরচেই মাঠের মাটি ভরাট করতে হয়েছে। এখন আমাদের বিদ্যালয়ের জমিদাতা বিদ্যালয়ের জন্য নতুন আরেকটি জায়গা দিয়েছেন। আমরা চাই এই জায়গায় যেনো দ্রুতই স্কুল নির্মাণ হয়।
দুর্গাপুর সদর ইউনিয়ন ইউপি চেয়ারম্যান সাদিকুল ইসলাম জানান, সীমান্তের একেবারে প্রত্যন্ত কয়েকটি গ্রামের আওতায় এই বিদ্যালয়টি অবস্থিত। এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কাছেও বিদ্যালয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই বিদ্যালয়ের কিছু দুর থেকেই ভারতীয় সীমান্তের কাটাতারের বেড়া। তাই স্কুলের নতুন ভবনের কাজ শুরু হওয়ার পরপরই সীমান্ত জটিলতায় তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে আমরা চেষ্টা করছি নতুন জায়গায় যেন দ্রুতই বিদ্যালয়টি নির্মাণ করা যায় এবং এই বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষেরও দৃষ্টি কামনা করছি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী মাঃ খোয়াজুর রহমান জানান, ২০২২ সালে মার্চে এই স্কুলটির নির্মাণের প্রস্তব আসে এবং এই বছরের অক্টোবরেই ১ কোটি ২৬ লাখ টাকায় বিদ্যালয়টির টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ। এবং বিদ্যালয়টি নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়তেই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত জটিলতায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তিতে বিদ্যালয়টি নতুন ভবন নির্মাণের টেন্ডারটিও বাতিল হয়। তবে ভবন নির্মাণের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ নতুন জায়গা দিয়েছে। ঐ জায়গায় বিদ্যালয়টি নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।