দুর্নীতি আর অনিয়ম নিয়েই চলে নিয়ামতপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিস যেখানে সাধারণ মানুষের পকেট কাটা হয় নিয়মিত নিয়ামতপুর উপজেলা সা-রেজিষ্ট্রি অফিস। যার নাম শুনলেই আতকে উঠেন সাধারণ মানুষ। জমি ক্রয় কিংবা বিক্রয় যাই হোক না কেন সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে আসলেই তাদের হয়রানীর স্বীকার হতে হয়। যেখানে অনিয়মই নিয়ম। প্রকাশ্যে ঘোষনা দিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে দূর্নীতি আর লুটপাট করা হয়। সরকারী খরচের চেয়ে কয়েকগুন খরচ আদায় করে। সমিতির নামে চলছে সাগর চুরি।
আর এসব অনিয়ম দুর্নীতি আর লুটপাটের সার্বিক দায়িত্ব পালন করছেন নিয়ামতপুর উপজেলার সাব রেজিস্টার অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোঃ মোজাফফর হোসেন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক দ্বিজেন্দ্রনাথ দাস । দলিল লেখকদের সমিতির মাধ্যমে চলে এই লুটপাটের মহাযজ্ঞ।
সম্প্রতি সভাপতি এবং সম্পাদকের আচরণে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে দলিল লেখক সমিতির বেশ কিছু সাধারণ সদস্যরা । ক্ষমতার পালা বদলের সাথে সাথে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ক্ষমতার দাপটে সমিতির সদস্যরা ও সাধারণ জনগন কোন ঠাসা হয়ে পড়েছেন এমনটি অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কাজী সামছুল আলম। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কাজী সামসুল আলম উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাব রেজিস্ট্রার অফিসের নৈশ্য প্রহরী শাহজামাল বুধু সকল অনিয়মের টাকা লেনদেন করেন। শাহজামাল বুধু বলেন, বিকাল ৪ টার পরে দলিল রেজিস্ট্রি করতে চাইলে প্রতি দলিলে ১ হাজার টাকা করে দিতে হবে। প্রতি দলিলে লিখনী বাদে সমিতির জন্য ১১ হাজার টাকা করে দিতে হবে। যা পরবর্তীতে সকল দলিল লেখকরা ভাগ বাটোয়ারা করে নেন।
অভিযোগকারী কাজী সামসুল আলম বলেন, আমি গত ২২ জুন জমি রেজিষ্টি করার জন্য সমিতির সভাপতি মোজাফফর হোসেন (লাইসেন্স নং-৬৮) এর নিকট যাই। তার মাধ্যমে দলিল রেজিষ্টি করতে গেলে দলিল লেখনী ও সরকারী অন্যান্য খরচ বাদে আমাকে সমিতির নামে ১১ হাজার টাকা দিতে হয়েছে এছাড়া দলিল লিখতে ৪টা পার হওয়ার জন্য অতিরিক্ত ১ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ৩৫০০/৪০০০ টাকা সরকারি খরচ কিন্তু সে সব দলিলে ও স্টাম্পে লেখনি সরকারি ট্রাজারী বাদ দিয়ে ১১ হাজার টাকা শুধু দলিল লেখক সমিতিতে দিতে হয়।
এ শুধু ২২ জুনের ঘটনা না এটি নিয়ামতপুর সাব-রেজিষ্টি অফিসের প্রতিদিনের ঘটনা। যেখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা লুটপাট হয়। যা দেখার কেউ নাই।
জমি রেজিস্ট্রি করতে দলিল লেখক সর্বনিম্ন ২০,০০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকার বেশি নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, কয়েক মাস আগে ও নিয়ামতপুর দলিল লেখক সমিতির বিরুদ্ধে একাধিক চলমান সংবাদ প্রকাশ হলেও প্রসাশন কোন পদক্ষেপ না নেওয়াই তারা আরো নানা অপকর্ম শুরু করেছে, এতে সাধারণ জনগন আরো কোন ঠাসা হয়ে পড়েছে। ইতি মধ্যে অনেক সময়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা একাধিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে।
বেশ কিছু সেবা গ্রহীতারা জানান, দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিনা অনুমতি ছাড়া দলিলের ফি কোন দলিল লেখক কম নিতে পারবে না। প্রতিটি গ্রাহক তাদের সিন্ডিকেটের কাছে টাকা জমা দিলে তখন দলিল লেখকরা দলিল করতে পারবে।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় এই দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একক ভাবে নির্বাচিত হন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির জন্ম দিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয় এই দলিল লেখক সমিতিতে পিয়ন থেকে শুরু করে সকলকে সালামি দিয়ে খুশি রাখতে হয়। সালামি না দিলে তাদের দলিল আটকে রেখে চাপের মুখে ফেলে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নৈশ্য প্রহরী শাহজামাল বুধুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্ট করলে তাকে মোবাইলে পাওয়া যায় নাই।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক দ্বিজেন দাসের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায় নাই।
সমিতির সভাপতি মোজাফর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইলে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে জানতে নিয়ামতপুর সাব রেজিস্টারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
দলিল লেখক সমিতির দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন লিখিত অভিযোগ পেয়েছি আমি জেলা রেজিস্ট্রারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো