নওগাঁর বিলছাড়া এলাকা থেকে সুমন হোসেন নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে মৃত্যুর পূর্বে সুমন হোসেন তার ফেসবুক আউডিতে ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে থেকে লাইভ ভিডিওতে এসে সে বাঁচার জন্য বন্ধু ও পরিচিত জনদের সহযোগীতা চেয়ে আকুতি জানায়, এমনকি তার বাবা নেই পরিবারে তার মা ও বোন রয়েছে। তার মা ও বোন কে দেখবে সহ তাকে ভ্যান চালকের ছেলে নব্য অনেক টাকার মালিক বুলবুল ও তার লোকজন বাঁচতে দিবে না মেরে ফেলবে এমন নানা কথা ও বলেছেন সেই কথাগুলো ইতি মধ্যেই জন-সাধারনের মাঝে ভাইরাল হয়েছে।যুবক সুমন হোসেন হলেন, নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর বাসস্টান্ড এলাকার কম্পিউটার ব্যবসায়ী এবং বিলছাড়া গ্রামের ময়েন উদ্দিন এর ছেলে। এছাড়াও তিনি নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) পত্নীতলা উপজেলা শাখার একজন অন্যতম সদস্য ছিলেন। সুমন হোসেন এর মৃত্যুর ঘটনায় তার গ্রাম সহ নজিপুর বাজারের ব্যবসায়ী মহলসহ সর্ব সাধারনের মাঝে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। সুমনকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে সুমন হোসেন হত্যায় জড়ীতদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে সোমবার ১৮ নভেম্বর দুপুর ১২টায় নজিপুরে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।যুবক সুমন হোসেন এর মৃতদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে পত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ এনায়েতুর রহমান জানান, সোমবার ১৮ নভেম্বর সকালের দিকে স্থানীয়রা গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় যুবক সুমনের মৃতদেহ দেখতে পান। পরে ঘটনাটি থানা পুলিশে খবর দিলে থানা পুলিশ গিয়ে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট অন্তে মৃতদেহ উদ্ধার করে। তিনি আরো জানান, যুবক সুমন হোসেন ডিজিটাল মার্কেটে কিছু ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। মৃতদেহ উদ্ধারের কয়েক ঘন্টা আগে ”সুমন হোসেন” নামে সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুক আইডি থেকে করা লাইভে ‘অন্ধকারে’ কিছু কথা বলতে শোনা যায়। ৫ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড অন্ধকারে করা ঐ লাইভে অভিযোগ করা হয়, বুলবুল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি সুদের উপর ৭০ হাজার টাকা ধার গ্রহন করেন সুমন। টাকা ধার গ্রহনের সময় বুলবুল নামের ব্যক্তি সুমন হোসেন এর কাছ থেকে ফাঁকা ব্যাংক চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে রাখেন। টাকা গ্রহনের পর কয়েক ধাপে বুলবুল কে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেয় সুমন হোসেন। কিন্তু পরে বুলবুল সুমন হোসেন এর কাছ থেকে ১০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা পান বলে চাপ দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে গত রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সুমন হোসেন কে ধাওয়া করা হয়। ঘুটঘুটে অন্ধকারে করা ঐ ভিডিও রেকর্ডে আরো দাবি করা হয়, অন্ধকারে তাকে যারা ধরতে খুজছেন তারা বুলবুল লোকজন এমটায় নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছে জানিয়ে তার মৃত্যু হলে মৃত্যুর জন্য বুলবুল-ই দায়ী।
এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ আরো জানান, ঐ ফেসবুক আইডিটি আসলেই সুমনের কিনা কিংবা লাইভের অডিও’র ঐ ব্যক্তিটি কি সুমন হোসেন না অন্য কেউ তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি বুলবুল নামে কোনো ব্যক্তির সাথে সুমন হোসেন এর আসলেই কোনো আর্থিক লেনদেন ছিলো কিনা তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এসবের সত্যতা বের হলেই আসল রহস্য উন্মোচন হবে বলেও মনে করেন পুলিশ কর্মকর্তা। অপরদিকে উদ্ধারকৃত সুমন হোসেন এর মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ।