নবীন নেতৃত্বের হাত ধরে ভবিষ্যতের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল খিরোল মহিলা দাখিল মাদরাসা। ১৯ নভেম্বর, বুধবার, মাদরাসার মিলনায়তনে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নব নির্বাচিত সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম-এর অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়। এলাকার দীনি শিক্ষা প্রসারে মাদরাসাটির ঐতিহ্য ধরে রেখে নতুন সভাপতিকে ঘিরে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে সৃষ্টি হয়েছে এক নতুন উদ্দীপনা।
ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা মোঃ শামছুজ্জামান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অভিষেক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সহকারী মৌলভী মাওলানা আব্দুল খালেক। অনুষ্ঠানে বক্তারা মাদরাসার সার্বিক অগ্রগতি, নারীর শিক্ষায় ইসলামের ভূমিকা এবং সমাজের নৈতিক উন্নয়নে মাদরাসার গুরুত্ব তুলে ধরেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঘুগরাকাটি ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম সারওয়ার নব নির্বাচিত সভাপতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি কেবল একজন প্রশাসনিক প্রধান নন, তিনি প্রতিষ্ঠানটির স্বপ্নদ্রষ্টা ও অভিভাবক। মাওলানা রফিকুল ইসলাম-এর নেতৃত্বে এই মাদরাসা ইসলামী মূল্যবোধ ও আধুনিক শিক্ষার এক সেতুবন্ধন তৈরি করে নারী শিক্ষায় আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।” তিনি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে মাদরাসার উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অভিষেক অনুষ্ঠানে নবরূপী সভাপতির আসন গ্রহণ করে মাওলানা রফিকুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে মাদরাসার মানোন্নয়নে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “খিরোল মহিলা দাখিল মাদরাসাকে একটি মডেল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করাই আমার লক্ষ্য। শিক্ষাদান পদ্ধতির আধুনিকায়ন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং মাদরাসার আদর্শ পরিবেশে মেয়েদেরকে যুগোপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা আমাদের প্রধান কাজ হবে।” তিনি আরও বলেন, “ইনশাআল্লাহ, আমরা এই প্রতিষ্ঠান থেকে এমন নারী নেতৃত্ব তৈরি করব, যারা সমাজকে আলোকিত করবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঘুগরাকাটি ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা সুজা উদ্দিন, বেজপাড়া হায়াতুন্নেছা দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা একেএম আজহারুল ইসলাম,আমাদী ইউনিয়নের জামায়াতের আমির মাওলানা সাজ্জাদুল ইসলাম, বাগালী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা আঃ হামিদ, প্রতিষ্ঠাতা সুপার (সাবেক) মাওলানা শামসুজ্জামান,ঘুগরাকাটি মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক মাওলানা মুর্তজা,ঘুগরাকাটি মাদ্রাসার সহ সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাওঃ ওসমান গনি এবং স্থানীয় অভিভাবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
বিশেষ অতিথিরা সকলেই নতুন সভাপতিকে অভিনন্দন জানান এবং মাদরাসাটি যাতে দীনি ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয় ঘটিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নারী শিক্ষা কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে, সে বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। বিশেষ করে, বক্তারা নতুন প্রজন্মের মধ্যে ইসলামী জ্ঞান ও নৈতিকতা ছড়িয়ে দেওয়ার উপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সুধীজনের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি প্রতিষ্ঠানটির প্রতি এলাকার মানুষের গভীর আস্থা ও ভালোবাসার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। এই অভিষেক অনুষ্ঠান মাদরাসার জন্য এক নতুন দিগন্তের সূচনা করল, যেখানে নতুন সভাপতির নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি সাফল্যের শিখরে পৌঁছানোর প্রত্যাশা করা হচ্ছে।