ছাত্র-জনতার গনভুথ্যানের পরপরই পুরো পুলিশবাহিনী একটু নরে চরে বসেছে। গত ৫ আগষ্টের পরে বেশ কিছুদিন কর্মবিরতী কাটিয়ে পুনরায় কর্মস্থলে যোগ দিলেও এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি ভাবে পুলিশের কার্যক্রম তেমন ভাবে কোথাও দেখা যাচ্ছেনা বললেই চলে। আর পুলিশের এমন নিরবতাকে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগাচ্ছে মাদককারবারিরা। নারায়ণগঞ্জ জেলার সবচাইতে বড় সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম সমস্যা হলো মাদক। যার ভয়ানক থাবা থেকে ছাড় পাচ্ছেনা যুব সমাজ।মাদকব্যবসা অধিক লাভবান হওয়ায় এই ব্যবসা বেছে নিয়েছেন অনেকেই।নারায়ণগঞ্জ রাজধানীর খুব নিকটবর্তী হওয়ায় এখানে উদ্বেগজনক হারে মাদক ব্যবসা বেড়েই চলেছে। জেলার এমন কোনো স্থান নেই যেখানে মাদকের সয়লাব নেই। এ অবস্থায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।গতকাল নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখাযায়,ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, কোকেন, আফিম ও গাজার ব্যবসা চলছে দেদারসে।বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সিন্ডিকেট গড়েতুলে বিশাল আকারে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করছেন মাদক ব্যবসায়ীরা।এই মাদক ব্যবসা পরিচালনায় শেল্টার হিসেবে তাদের রয়েছে নিজস্ব কিশোরগ্যাংবাহিনী।এই বাহিনী দ্বারা বিভিন্ন এলাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন মাদক ব্যবসায়ীরা। সূত্রনুসারে জানাযায়, নারায়ণগঞ্জের চারপাশ ঘিরে রয়েছে নদীপথ।তাই এই নদীপথেই খুভ সহজেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাদক চলে যায়।মহাসড়কগুলোতে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ চেকপোষ্ট থাকার কারণে মাদক সরবরাহে সড়ক পথের চেয়ে নদীপথই মাদক ব্যবসায়ীদের জন্য নিরাপদ পথ হিসবে বেছে নিয়েছে তারা। অনুসন্ধান বলছে , বর্তমানে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় একরকম প্রকাশ্যেই মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। হাত বাড়ালেই এখন পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা,গাজা,ফেন্সিডিল সহ আরও অন্যান্য মাদক দ্রব্য। এই মাদক কিশোর থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বৃদ্ধ শিক্ষক সরকারি কর্মচারী ব্যবসায়ী থেকে চিকিৎসক সবাই আছেন এই পথে। নগরীর জামতলা,মাসদাইর,গলাচিপা,বাশ্মুলি,নন্দী পাড়া, গলাচিপা, বাবুরাইল, কলেজ রোড, ডন চেম্বার, মিশন পাড়া, খানপুর, বরফকল, সৈয়দপুর, আলামিন নগর, পাগলা, ফতুল্লা আলীগঞ্জ,পঞ্চবটি, কাশিপুর, ভোলাইল, বাংলাবাজার, সিদ্ধিরগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, বহতম তল্লা, গোদনাইলসহ শহরের নিকটবর্তী এলাকাগুলোতে মাদকের রমরমা ব্যবসা চলেছে হরদম। জামতলা এলাকার এক বাসিন্দা জানায়,আমাদের এই এলাকা সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাদক শেষ করে দিচ্ছে এলাকার যুব সমাজকে। বর্তমানে প্রশাসনের কোন ভূমীকা না থাকার কারনে মাদক ব্যবসায়ীরা আরও বেশি বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে। তাই আমি মনে করি অতি দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর দিতে হবে প্রতিটি এলাকায় এবং এইগুলো দমনে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মাসদাইর এলাকার স্থানীয় এক বাড়িওয়ালা বলেন,সরকার পতনের পর থেকেই এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা আগের তুলনায় আরও বেশি উৎপাত বাড়িয়ে দেয়। তালের লালিত কিশোরগ্যং দ্বারা এলাকায় হামলা,ভাংচুর,লুটপাট সহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড করে যাচ্চে তারা। তাই অতি দ্রুত এই মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে মাসদাইর সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাদকের মরন নেশার প্রভাবে ভবিষ্যত প্রজম্ম নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রশাসনকে অগ্রগামী ভূমিকা পালনের আহবান জানাচ্ছি। এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার প্রত্যূষ কুমার মজুমদার জানায়, নারায়ণগঞ্জে আগের থেকে অনেকটাই আমরা কোঠরভাবে প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরালো করেছি। আমরা প্রতিনিয়ত অভিযানের মাধ্যমে এইসব অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনবো।
আমাদের অনেক থানায় লুটপাট সহ ভাংচুর করা হয়েছে তাই আমাদের ভিবিন্ন নথি পত্র ধ্বংস হয়ে গেছে। এবং থানা গুলো নতুন করে সংস্কার করতে একটু সময় লাগছে। তবে, খুব দ্রুত আমরা আমাদের সকল কার্যক্রম শুরু করবো।
এইদিকে ,সচতন মহলের দাবি যদি অতি দ্রুত প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু না হয় তবে শহরে পরিস্থিতি পর্যায়েক্রমে অবনতির দিকে যাবে। এ সুযোগে মাদক ব্যবসায়ী ও সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র’র সদস্যগণ খুন, অপহরণ ও চাঁদাবাজিসহ নানা কাজে তাদের ব্যবহার করতে থাকে। মাদকের এই নেশার জালে একবার জড়িয়ে পড়লে কেউ আর সহজে বেরিয়ে আসতে পারে না। ফলে মাদকসেবীরা দিনে দিনে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাই অতি দ্রুত প্রশাসনসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের উচিত নিজে সচেতন হয়ে এই সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা ।