ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নাসিরনগর উপজেলা শাখার নবগঠিত সার্চ কমিটিতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের পুর্নবাসন করা হয়েছে অভিযোগ করেছেন গণঅভ্যুত্থানে আহত জুলাই যোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা।
গতকাল সোমবার দুপুরে নাসিরনগর উপজেলা সদরের কলেজ মোড়ের শহীদ ইমরান চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এই দাবি তোলা হয়।
মানববন্ধনে জুলাই ও আগস্টে আন্দোলনে আহত জুলাই যোদ্ধা তাহজিন ভূঁইয়া জানান, গত বছরের ৫ জুলাই রাজধানী ঢাকার চকবাজারের চানখারপুল এলাকায় ছাত্র জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে পুলিশ এবং ফ্যাসিষ্টরা ছাত্র জনতার উপর গুলি করে হত্যা করছে। সে আন্দোলনে তার ডান হাতে চাইনিজ রাইফেলের গুলি লাগে। কিন্তু ঘটনার এক বছর পর আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদেরকে নিয়ে বিভিন্ন দল বিভিন্নভাবে রাজনীতি করছে। আমরা লক্ষ্য করছি নাসিরনগরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নাসিরনগর উপজেলা শাখার নবগঠিত সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের পুর্নবাসন করা হয়েছে। আমরা এই সার্চ কমিটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি দ্রæত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষনারও দাবি জানাচ্ছি। মানববন্ধনে জুলাই আন্দোলনে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত জুলাই যোদ্ধা লুৎফুর রহমান বলেন, গত ৫ জুলাই ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে আমার হাতে শর্টগানের গুলি লাগে। এই হাত নিয়ে চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন জুলাই সনদ ও জুলাই স্বীকৃতি অবিলম্বে দিতে হবে। আর যারা মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে পুর্নবাসন করছে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে। আমরা আমাদের রক্ত বৃথা যেতে দেবনা।
মানববন্ধনে আহত যুবক ইকরাম হোসেনের মা নাসিমা খাতুন বলেন, ছেলেকে ওয়ার্কসপের কাজ শিখিয়ে বিদেশ পাঠাবো বলে স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু গত ১৮ জুলাই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে যোগ দেয় সে। এ সময় সে ডান চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। আন্দোলনের পর আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য কোনো সহযোগিতা পাইনি। ছেলে আহত হওয়ার কোন বিচারও পাইনি। আমার ছেলে আহত হওয়ার বিচার পাই। সেই সাথে আমি জুলাই ঘোষণাপত্র চাই।
নাসিরনগর উপজেলার এনসিপির সার্চ কমিটির যুগ্ম সমন্বয়ক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) আসনে এনসিপির প্রার্থী কাজী মমিনুল হাসান জানান, বিএনপি, এনসিপি, জামাত মাঝে মধ্যে আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসন করছে। তা মেনে নিতে পারছে না জুলাই যোদ্ধারা। যারা এই শহীদের রক্তের সাথে প্রতারণা করবে, তাদেরকে অবশ্যই প্রতিহত করবে জনতা। এ সরকার জুলাই ঘোষণাপত্রের জন্য এক মাস সময় নিয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে তারা ঘোষণা করেনি। গেজেট প্রকাশ করেনি। এতে মনে হয় এ সরকার গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সরকার নয়। এই সরকার যদি জনআকাঙ্খা থেকে বিচ্ছিন্ন কোন কাজ করে জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করবে ইনশাল্লাহ। মানববন্ধনে জুলাই যুদ্ধারা ছাড়াও স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নারী পুরুষ অংশ নেন।