পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আরামকাঠী এক মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাণ হারাল সুমাইয়া নামের এক কিশোরী। এসএসসি পরীক্ষায় একটি বিষয়ে ফেল করার পর হতাশাগ্রস্ত হয়ে সুমাইয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সুমাইয়া নেছারাবাদ উপজেলার আরামকাঠী গ্রামের বাসিন্দা কবির হোসেন ও নাসিমা বেগমের একমাত্র মেয়ে। সে এ বছর আকলম মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।
শুক্রবার জুমার নামাজের সময় সুমাইয়ার বাবা মসজিদে গিয়েছিলেন, আর তার মা বাড়ির পাশে পারিবারিক দোকানে কাজ করছিলেন। কিছুক্ষণ পর নাসিমা বেগম বাড়িতে ফিরে এসে দেখতে পান, তার মেয়ে ঘরের ভেতরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে আছে। মায়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে দ্রুত সুমাইয়াকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সুমাইয়ার মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
আমাদের একটিমাত্র মেয়ে ছিল, আর কোনো সন্তান নেই। পরীক্ষার ফল খারাপ হওয়ায় সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। আমরা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি, পাশে থেকেছি। কিন্তু আজ সে তার বাবার গামছা গলায় পেঁচিয়ে চলে গেল।
পিতা কবির হোসেনও স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন মেয়েকে হারিয়ে। পরিবারের সদস্যরা ও প্রতিবেশীরা জানান, সুমাইয়া পড়াশোনায় ভালো ছিল, কিন্তু পরীক্ষার একটি বিষয়ে ফেল করায় সে দারুণ হতাশ হয়ে পড়ে।
আকলম মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন,
সুমাইয়া আমাদের স্কুলের একজন ভালো ছাত্রী ছিল। সে নিয়মিত ক্লাস করতো ও লেখাপড়ায় মনোযোগী ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এক বিষয়ে ফেল করায় সে এমন চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে—এটি আমাদের সবার জন্য বেদনার।”
নেছারাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বনি আমিন জানান,
আমরা খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে মরদেহ থানায় নিয়ে এসেছি। শুনেছি, মেয়েটি পরীক্ষায় ফেল করে হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে।