কালের পরিক্রমায় ৮০ বছর পার করেছে সীমান্তবর্তী ফেনীর পরশুরাম সরকারি মডেল পাইলট হাই স্কুল। ১৯৪৫ সালে জন্ম নেওয়া এ বিদ্যাপীঠ আজও শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাঝে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ বিদ্যালয় অসংখ্য কৃতি শিক্ষার্থী উপহার দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অব.) নুরুল করিম মজুমদার, বাংলাদেশ রেলওয়ের সাবেক জিএম ফারুক আহমেদসহ বহু মানুষ, যারা দেশ-বিদেশে কৃতিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বর্তমানে বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৬৩৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা—তিনটি শাখায় শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। সাম্প্রতিক এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলও আশাব্যঞ্জক। ২০২৩ সালে পাশের হার ছিল ৮৬.৭৮ শতাংশ (জিপিএ-৫: ৩১ জন), ২০২৪ সালে ৮৮.২১ শতাংশ (জিপিএ-৫: ২১ জন) এবং ২০২৫ সালে ৭৫.৮১ শতাংশ (জিপিএ-৫: ২১ জন)। চলতি বছরে ৩ জন শিক্ষার্থী বোর্ড বৃত্তি লাভ করেছে।
বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে শিক্ষক সংকট তীব্র। জাতীয়করণের পর ১৩টি পদ সৃজন না হওয়ায় নিয়োগ সম্ভব হয়নি। এখন মাত্র ১১ জন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস চলছে। বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও চারুকলাসহ নানা বিষয়ে শিক্ষক শূন্যতা রয়েছে।
অবকাঠামোগত সংকটও বড় সমস্যা। তিনটি ভবন থাকলেও শিক্ষার্থীর তুলনায় শ্রেণিকক্ষ কম। পর্যাপ্ত বেঞ্চ, টয়লেট ও নতুন ভবনের প্রয়োজনীয়তা জরুরি হয়ে পড়েছে।
বিদ্যালয়ের মাঠ উপজেলা পর্যায়ের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি সমাবেশের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। স্থানীয়দের মতে, যথাযথ উদ্যোগ নিলে ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আরও এগিয়ে যাবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান চৌধুরী আসিফ বলেন, “এই বিদ্যাপীঠের ছাত্ররা বিভিন্ন সেক্টরে সুপ্রতিষ্ঠিত। সকলের সহযোগিতায় এটিকে আগামী প্রজন্মের জন্য জ্ঞানের নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।”