রংপুরের পীরগঞ্জে একাধিক আইস্ক্রিম কারখানাগুলোতে নানা ধরনের বিষাক্ত উপাদান পাওয়া যাচ্ছে। গরমের সময় উপজেলা সদরসহ গ্রাম এলাকায় বিভিন্ন হাটবাজার ও কারখানাগুলো যত্র-তত্র ভাবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কেমিক্যাল দিয়ে আইসক্রিম তৈরি করে তাদের ব্যবসা করছে । সরেজমিনে দেখা মিলেছে ভেজাল উপকরনে তৈরি পীরগঞ্জের বেলাল ও নখারপাড়ার আশরাফুল ইসলাম এর পাইলট সুপার আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে। ফলে আইসক্রিমের নামে বিষ খাচ্ছে মানুষ । নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ অনুসারে এই দুই কারখানা বন্ধের দাবী জানান এলাকাবাসী। তীব্র এই গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন, এরই সুযোগে গ্রামাঞ্চলে ভ্রাম্যমাণ ভাবে বিক্রি হচ্ছে আইসক্রিম, আর দাবদাহে সাময়িক তৃষ্ণা মেটাতে শিশু সহ না না বয়সী মানুষ আইসক্রিম খেয়ে প্রাণ জুড়ানোর চেষ্টা করছে। তীব্র গরমে শিশুদের ভালবাসার পণ্য আইসক্রিম । এই সুযোগকে পুজি করে আইসক্রিম বিক্রেতা কৌশলে এসব ভেজাল আইস্ক্রিম বিক্রয় করছে অবুঝ শিশুদের হাতে । কারখানাগুলোতে দুষিত পানি ব্যবহার করা হচ্ছে এবং ভয়ংকর ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেছে । আইস্ক্রীমে ব্যবহার করা হচ্ছে ঘন চিনি, মিশানো হচ্ছে কাপড়ের রং । এছাড়াও দুধের বদল ব্যবহার করছে চকের গুঁড়া । খাবারের অনুপযোগী রং, চিনি, স্যাকারিন আর সরাসরি দূর্ষিত পানি ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে আইসক্রিম । এই সব আইসক্রিম কারখানায় নানা অনিয়মের অভিযোগও পাওয়া গেছে । শনিবার (১২ এপ্রিল) চতরা ডিগ্রি কলেজের সামনে বেলাল আইসক্রিম ও রায়পুর ইউনিয়ন নখারপাড়া বাজারে পাইলট সুপার আইসক্রিম কারখানার নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভেজালযুক্ত এসব আইসক্রিম কারখানাগুলোতে নানা ধরনের বিষাক্ত উপাদান পাওয়া যাচ্ছে। বাস্তবে এসব আইসক্রিম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে। দূষিত পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলোতে ব্যবহার করা হচ্ছে ঘন চিনি, কাপড়ের রং, চক পাউডারসহ নানা ক্ষতিকর উপাদান। সর্বশেষ নারিকেলি আইসক্রিমেও পাওয়া গেছে নানা ভেজাল উপকরণ। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জনবল স্বল্পতার কারণে ভেজাল আইসক্রিম কারখানায় নিয়মিত নজরদারি করা যায় না। আর সচেতনতার অভাবে শিশুরা এসব খাবার খেতে ভালোবাসে। তাই অসৎ ব্যবসায়ীরা দেদারচ্ছে এসব ক্ষতিকর আইসক্রিম বিক্রি করে যাচ্ছে। এলাকাবাসী জানায় দীর্ঘদিন থেকে প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে আশরাফুল ইসলাম পাইলট সুপার আইসক্রিমের মোড়কে ব্যবহার করছেন ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া ও বাগেরহাট সহ বিভিন্ন জেলার নামীয় প্রতিষ্ঠানের। এ বিষয়ে উপজেলা হাসপাতাল( আরএমও) ডাক্তার শরিফুল ইসলাম লিয়ন জানান, অস্বাস্থ্যকর কেমিক্যাল ও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি করা এই আইসক্রিম খেলে ক্যান্সার, কিডনির সমস্যা সহ পেট ব্যথা. আমাশা. ডায়রিয়া, শরীর দুর্বল সহ জটিল কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ । ভেজাল খাদ্যের কারণে ধ্বংস হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের ভবিষ্যৎ জীবন । এসব ভেজাল আইসক্রিম, ভেজাল খাদ্য অসাধু প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী।