বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে কর্মমুখী শিক্ষা অন্যতম প্রাসঙ্গিক এবং প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। বাংলাদেশে শিক্ষাব্যবস্থা একটি বড় চ্যালেন্জ হলো সনদধারী শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্রে দক্ষতার অভাব। এই প্রেক্ষাপটেনবেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় রংপুরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষকরা দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে কর্মমুখী শিক্ষারন ওপর গুরুত্বরোপ করেছেন।লেখা মুখস্ত করে পরক্ষা দিয়ে সনদ পাওয়া সম্ভব, দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব না। দক্ষতা অর্জন করতে হলে প্রায়োগিক, বাস্তবিক কাজের সক্ষমতা থাকতে হবে। বর্তমান প্রতিযোগিতামূল সময়ে মুখস্থ পাঠ্যপুস্তকে সনদ অর্জন করে দক্ষতা অর্জন সম্ভব হবে না, দেশের অর্থনীতি, জাতীয় আয়,দক্ষ মানবসম্পদ, বৈজ্ঞানিক চর্চা, গবেষক এবং জাতীয় সকল স্বার্থে বাস্তবিক জ্ঞানের বিকল্প নেই। মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম ভুঁইয়ান (শিক্ষক) নিজে প্রায়োগিক দক্ষতা শিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষার্থীদের গবেষনা কাজে সাহায্য করতেছেন, নিজ উদ্যোগে বিভাগের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার ল্যাবে নিয়ে যেয়ে কম্পিউটার বেসিক থেকে এডভান্স শিক্ষা প্রদান করতেছেন, বিভিন্ন কোম্পানিতে শিক্ষার্থীদের অনুমতি পত্র সহ পাঠিয়ে বাস্তবিক জ্ঞান অর্জনের এবং প্রয়োগ দেখাচ্ছেন। লিডারশীপ কুয়ালিটি বাড়ানোর জন্য একাদিক সংগঠনের,সামাজির কাজের সাথে থাকার প্রতি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন। মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম ভুঁইয়ান মনে করেন ” এ ধরনের দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র কর্মসংস্থান নয় বরং উদ্ভাবন ও উদ্যোগ গ্রহনেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে।কর্মমুখী শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন রাখেন আশরাফুল আলম (বিভাগীয় প্রধান ) ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ ” কর্মমুখী শিক্ষা মানে শুধু তাত্ত্বিক জ্ঞান নয়,বরং বাস্তবমুখী দক্ষতা অর্জন।এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের জ্ঞানকে কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়। বর্তমান চাকরির বাজারে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে এমন দক্ষতার মধ্যে প্রযুক্তিগত জ্ঞান, যোগাযোগ দক্ষতা,সমাধানমুখী চিন্তা এবং দলগত কাজ করার ক্ষমতা।
কিভাবে কর্মমুখী শিক্ষা বাস্তবায়ন করা যেতে পারে সেই কর্মমুখী শিক্ষার সফল বাস্তবায়নের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহন করা প্রযোজন।১) পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনা: প্রচলিত পাঠ্যক্রমের পরিবর্তে কর্মমুখী এবং প্রযুক্তি ভিত্তিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।২) ইন্ডাস্ট্রি সংযোগ : বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মেলবন্ধন তৈরি করতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা সরাসরি কাজের অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারবে।৩) প্রশিক্ষণ উন্নয়ন: শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি এবং কর্মমুখী শিক্ষা প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা জুরুরি। ৪) উদ্যোক্তা তৈরিতে উৎসাহ: শিক্ষার্থীদের নতুন উদ্যোগ গ্রহনের উৎসাহিত করতে প্রশিক্ষণ সাথে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা উচিত।সামসুল আলম ( সহযোগী অধ্যাপক,গবেষক ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ) অনুপ্রেরণা এবং প্রয়োজনীয় সেমিনার আয়োজন করেন “৷ বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় কর্মমুখী শিক্ষার সংকট এখনো বিরাজমান। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষা ব্যবস্থায় তাত্ত্বিক পাঠ্যক্রম বেশি গুরুত্ব পায়,যার ফলে শিক্ষার্থীদের বাস্তবিক কাজের দক্ষতা গড়ে ওঠে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যদি আরো ইন্ডাস্ট্রি ভিত্তিক প্রশিক্ষণ এবং ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম ব্যবস্থা করা যায় তবে শিক্ষার্থীরা বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে।খাদিজা শারমিন ( প্রভাষক ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ) প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করেন দক্ষ জনশক্তি তৈরির মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে রুপান্তর করতে হলে শিক্ষার ক্ষেত্রে নতুম দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহন করতে হবে।কর্মমুখী শিক্ষা সেই পরিবর্তনে অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। শিক্ষাবিদদের উদ্যোগ,প্রযুক্তিগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা বাস্তবায়নে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। শিক্ষা কেবল শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নয়,বরং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।দক্ষ জনশক্তি তৈরির মাধ্যমে বাংলাদেশ বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবে.