রাস্তা থেকে বান্ধবীর বাসায় ডেকে নেওয়ার পর গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেছেন। এতে বান্ধবীসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
রোববার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস মামলাটি গ্রহণ করে বরগুনা থানার ওসিকে মামলা এজাহারভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামি হলেন- বরগুনা শেরেবাংলা সড়কের নাজেম মুসুল্লির ছেলে রুহুল আমিন (৪৫) ও তার বন্ধু বরগুনায় ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করা সিরাজগঞ্জের মো. হাদিসুর রহমান নয়ন (৩৫)। এছাড়া ভুক্তভোগীর বান্ধবী মোছা. সিমা (৩৩)।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বিশেষ পিপি রনজুয়ারা সিপু।
জানা যায়, ভুক্তভোগী বরগুনা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নে বসবাস করেন। তার বান্ধবী সিমা বরগুনা থানাপাড়ায় ভাড়া থাকেন। সিমা তার বাসায় বিভিন্ন বয়সি মেয়েদের রেখে যুবকদের এনে অবৈধ ব্যবসা করেন। ১৬ মে বিকাল ৩টার দিকে ভুক্তভোগী তার বান্ধবীর বাসার সামনে দিয়ে বরগুনা শহরে যাচ্ছিলেন। এ সময় সিমা তার বান্ধবীকে দেখে বাসার ভেতরের একটি কক্ষে ডেকে নেন।
একটু পরে রুহুল আমিন ও তার বন্ধু হাদিসুর ওই কক্ষে প্রবেশ করেন। সিমা তার বান্ধবীকে বলেন, ওরা যা বলে তোর শুনতে হবে। এ কথা বলে সিমা কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। প্রথমে রুহুল আমিন ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বাধা দিলে হাদিসুর একটি রুমালে মেডিসিন লাগিয়ে নাকের সামনে ধরেন। এতে গৃহবধূ মাথা ঘুরে পড়ে যান। এ সময় প্রথমে রুহুল আমিন ধর্ষণ করেন। পরে হাদিসুর ধর্ষণ করেন। দুই বন্ধু মোবাইলে ধর্ষণের এ ভিডিও ধারণ করে রাখেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, আমার বান্ধবী সিমার সহযোগিতায় রুহুল আমিন ও হাদিসুর ধর্ষণের চেষ্টা করেন। আমি এতে বাধা দেই। এ সময় হাদিসুর একটি রুমালে মেডিসিন লাগিয়ে আমার নাকে ধরেন। আমি মাথা ঘুরে পড়ে যাই। এরপর দুই বন্ধু আমাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছেন। ধর্ষণের পর আমি মারাত্মক আহত হই।
তিনি বলেন, ধর্ষণের সময় তারা মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও ধারণ করে রাখেন। রুহুল আমিন তার বন্ধুর ধর্ষণের ভিডিও আমাকে দেখিয়ে বলেন, কাউকে জানালে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেব।
ভুক্তভোগী বলেন, পরে আমি রুহুল আমিনের ফার্মেসিতে গিয়ে ধর্ষণের ভিডিও ডিলিট করতে অনুরোধ করি। তখন রুহুল আমিন আমার কাছে এক লাখ পঁচাত্তর হাজার টাকা চান। আমার স্বামী ঢাকায় ছিলেন। তার পরামর্শে আমি মামলা করি।
রুহুল আমিন ও হাদিসুর রহমানের ফোন বন্ধ থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
বরগুনা থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, আদালতের আদেশ পেলে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেব।