কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বরাদ্দ ছাড়াই অনুমোদনের প্রয়োজন মনে না করে ভাড়া পরিশোধ ছাড়াই খামখেয়ালি ভাবে বসবাস করে আসছেন পিরোজপুরের ইন্দুরকানী (জিয়ানগর) উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কে,এম, মামুনুর রশীদ।
সরকারী বাসা বরাদ্দ কমিটির পক্ষ থেকে বারবার বলা সও্বে তিনি কারো কথায় কোন কর্নপাত না করে তার খামখেয়ালীপনা বহাল রেখেছেন। তিনি উপজেলা পর্যায়ের একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হয়ে ও বসবাস করছেন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কোয়ার্টার ডরমিটরিতে। যেখানে তিনি সরকারী রাজস্ব থেকে মূল বেতনের শতকরা ৪০ ভাগ বাড়ি ভাড়া খাতে গ্রহণ করছেন, সেখানে তিনি এ রুচিহীনতা ও হীনমন্যতার কাজটি কি করে করছেন, তিনি কিভাবে সরকারের লক্ষাধিক টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন, সে ব্যাপারে ও সংস্লিষ্ট সবার মনে প্রশ্ন জেগেছে।
সংশ্লিষ্ট সূএে জানা যায়, ইন্দুরকানী (জিয়ানগর) উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কে,এম, মামুনুর রশিদ ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে অত্র উপজেলায় যোগদানের পর মার্চ ২০২৫ থেকে গেজেটেড কোয়ার্টারে বসবাস না করে বরাদ্দ ছাড়াই বিনা অনুমতিতে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের ডরমিটরিতে বসবাস করে আসছেন। বছরজুড়ে তিনি বসবাস করে আসলেও উপজেলা বাসভবন বরাদ্দ কমিটির পক্ষ থেকে বারবার বলা সত্ত্বেও তিনি কারো কথার কোন কর্পাপাত না করে বরাদ্দ না নিয়ে ভাড়া পরিশোধ ছাড়াই তিনি নিজের হুকুম বহাল রেখেছেন। বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে টক অফ দ্যা জিয়ানগরে পরিনত হতে থাকলে উপজেলা জুড়ে সবার নজরে আসে। তিনি ব্যক্তি হিসেবে একজন খামখেয়ালিপনা কর্মকর্তা হিসেবে ও সবার কাছে পরিচিত বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য যে, বিগত ২৯ জুন তারিখে উপজেলা খাদ্য গুদামে ভিডব্লিউবি কর্মসূচীর আওতায় ২৪৩ জন সুবিধা ভোগীদের মাঝে জনপ্রতি ৩০ কেজি করে চাল বিতরণে অনিয়ম,নিম্নমানের ও পঁচা চাল বিতরণের ব্যাপারে সুবিধাভোগীরা অভিযোগ করেন। খবর শুনে সেখানে কয়েকজন সাংবাদিকের আগমন ঘটলে সাংবাদিক দের উপস্থিতি লক্ষ্য করে তিনি বিতরণ বন্ধ করে দেন ও সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিনা অনুমতিতে ভিতরে কি করে প্রবেশ করলো সে ব্যাপারে তিনি প্রশ্ন করেন ও আইনের ভয় দেখান। সাংবাদিকদের সাথে উদ্ধত্বপূর্ণ আচরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই তাকে ধিক্কার জানান। বিষয়টি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেনের কাছে জানালে তিনি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করলে ও পরে তা জানা যায়নি।
অনুমোদন ছাড়া বিনা ভাড়ায় কি করে বসবাস করছেন এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন,আপনাদের কি খেয়ে দেয়ে কোন কাজ নেই আপনারা ঘরে বসে মনগড়া সংবাদ পরিবেশন করেন, শুধু শুধু অন্যের ব্যাপারে কৌতুহলী হয়ে নাক গলান। তিনি বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আছে এবং বিষয়টি সবার নজরে এসেছে এ নিয়ে নিউজ করা হবে বললে তিনি বলেন যা ইচ্ছে তাই করেন এতে আমার কিছু যায় আসে না।
উপজেলা সরকারি বাসভবন বরাদ্দ কমিটির সদস্য সচিব ও এলজিডি প্রকৌশলী লায়লা মিথুনকে অফিসে না পেয়ে ফোন করা হলে জানান, তিনি একাধিক উপজেলার দায়িত্বে আছেন বিধায় সপ্তাহে দুএকদিন ইন্দুরকানী অফিস করেন। অনুমোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন কাগজপত্র না দেখে বলা যাচ্ছে না বলে তিনি এড়িয়ে যান। তার দপ্তরের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরত কমিউনিটি অর্গানাইজার মো.শাহ-পরানের নিকট অনুমোদনের কপি ও টাকা জমার রশিদ দেখতে চাইলে তিনি বলেন,অনুমোদন সবেমাত্র আজ হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন টাকা জমা হয়নি। বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে আসায় ও সাংবাদিকদের টেলিফোনে জানতে চাওয়ায় তিনি দিশেহারা হয়ে সবেমাত্র অনুমোদনের প্রয়োজন মনে করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সরকারি বাসভবন বরাদ্দ কমিটির সভাপতি হাসান বিন মোহাম্মদ আলীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ও মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।