বরিশালে একটি ভুল বোঝাবুঝি থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটির ওপর কৃষকদলের নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। এই হামলায় চারজন আহত হয়েছেন, এবং নাগরিক কমিটি ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে।
ঘটনা এবং প্রেক্ষাপট
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বরিশাল নগরীর সোহেল চত্বরে জাতীয় নাগরিক কমিটি দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আগ পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলে।
নাগরিক কমিটির অভিযোগ
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য ডা. মাহমুদা মিতু বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিজয় দিবস উদযাপন করছিলাম। হঠাৎ কৃষকদলের নেতাকর্মীরা আমাদের ‘আওয়ামী লীগ’ বলে মনে করে হামলা চালায়। আমাদের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে, চেয়ার ভাঙচুর করে। এমনকি অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, আমাদের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু তারা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে।’
হামলায় আহত চারজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। আহতরা হলেন:
কৃষকদলের বক্তব্য
হামলার অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন বরিশাল মহানগর কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম, জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে কিছু আওয়ামীপন্থী সড়ক আটকে প্রোগ্রাম করছেন। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে আমরা তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিই। তবে কোনো ধরনের মারামারির ঘটনা ঘটেনি।’
পুলিশের অবস্থান
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, ‘দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। যদি কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নাগরিক কমিটির প্রতিক্রিয়া
জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক শাকিল মৃধা বলেন, ‘আমরা নিজেদের পরিচয় দেওয়ার পরেও তারা আমাদের আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দাবি করে হামলা চালায়। এমন সহিংসতার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
পরিস্থিতির মূল্যায়ন
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমন ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক কমিটির সদস্যরা। এ ধরনের সহিংসতা বন্ধে রাজনৈতিক এবং সামাজিকভাবে সচেতনতার প্রয়োজন বলে অনেকে মত প্রকাশ করেছেন।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হলে বরিশালের সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।