বরিশালের বানারীপাড়ার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের নরোত্তমপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন মোল্লা ও মোল্লা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হাত থেকে বাচতে সংবাদ সম্মেলন করেছে পার্শ্ববর্তী খান পরিবারের সদস্যরা। ২৮ জুন শনিবার বিকেল ৫ টায় বানারীপাড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হামলার শিকার ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধিন হামলায় গুরুতর আহত বজলুর রহমান খানের সহ-ধর্মিনী মুন্নি রহমান।২৬ জুন গাছ কাটা’কে কেন্দ করে কথা কাটা,-কাট ও এক পর্যায়ে জাকির মোল্লা, তার ভাই এছাহাক মোল্লা,জামাল মোল্লা,কামাল মোল্লা ও মোল্লা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হামলায় মহিলা সহ বজলুর রহমান খান ও তার পরিবারের ৪ জন গুরুতর আহত হয়।এ ঘটনায় বানারীপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাকির মোল্লা, তার ভাই এছাহাক মোল্লা সহ ১৩ জনকে আসামী করে বানারীপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভূক্তভোগী মুন্নি রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে মুন্নি রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগে জানান,উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের নরোত্তমপুর গ্রামের বজলুর রহমান খান পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন যাবত পার্শবর্তী বানারীপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাকির মোল্লা,এছাহাক মোল্লা পরিবারের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো।এরই ধারাবাহিকতায় ২০ জুন শুক্রবার বজলুর রহমান বাড়িতে না থাকার সুযোগে জাকির মোল্লা ও এছাহাক মোল্লা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে পার্শ্ববর্তী বজলুর রহমানের ভোগদখলীয় সম্পত্তিতে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে নেয়। বজলুর রহমান বাড়ি এসে ২৬ জুন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মোল্লা বাড়ির সামনের রাস্তায় জাকির মোল্লাকে গাছ কাটার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে সে প্রথমে ডাক-চিৎকার, গালি-গালাজের একপর্যায়ে জাকির মোল্লার ভাই এছাহাক মোল্লা,জামাল মোল্লা,কামাল মোল্লা, রবিন সহ তাদের পরিবারের অন্যান্য ১৩/১৪ জন সদস্য সেখানে উপস্থিত হয়ে রামদা,লোহার রড,লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে বজলুর রহমানের উপর হামলা চালায়। বজলুর রহমানের ডাক-চিৎকার শুনে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে হামলায় বাধা দিলে আসামীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের উপরও হামলা চালায়। হামলায় বজলুর রহমান খান(৫৫),মজিবর রহমান খান(৭৫), নিলুফা বেগম (৬৫) ও মুন্না রহমান গুরতর আহত হয়। এ সময় আহতদের ডাক-চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে বিবাদীরা সেখান থেকে খুন-জখমের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।এ সময় বজলুর রহমান খান ও মজিবর খানের স্বজনরা আহদের উদ্দ্বার করে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।এর মধ্যে মজিবর খানের অবস্থার অবনতি হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় আহত বজলুর রহমানের সহ-ধর্মিনী মুন্নি রহমান বাদী হয়ে বানারীপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাকির মোল্লা সহ ১৩ জনকে আসামী করে বানারীপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার অন্যান্য আসীমারা হলেন,জাকির মোল্লার বড় ভাই এছাহাক মোল্লা, ছোট ভাই জামাল মোল্লা ও তার স্ত্রী রোজিনা বেগম,কামাল মোল্লা,জাকির মোল্লার স্ত্রী শায়লা জাকির, ছেলে রবিন মোল্লা, মেয়ে ডায়না, এছাহাক মোল্লার ছেলে রুবেল মোল্লা, পারভেজ মোল্লা, রাসেল মোল্লা ও তার ছেলে হৃদয় মোল্লা ও জাকির মোল্লার বোন মঞ্জুরি বেগম।
এদিকে মামলার বাদী মুন্নি রহমান আরো অভিযোগে জানান, বিবাদিদের বিরুদ্দ্বে মামলা দায়ের হলেও আসামী মঞ্জুরি বেগমের আত্মীয় বানারীপাড়া থানায় কর্মরত বশির নামে এক কনষ্টেবল আসামীদের আগাম তথ্য জানিয়ে দেয়ার কারনে এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি থানা পুলিশ। পক্ষান্তরে আসামীরা দাও, রামদা নিয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান করে বাদী পক্ষের লোকজনকে অব্যাহতভাবে গালি-গালাজ করে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মোস্তফা জানান,বিষয়টি তিনি শুনে তৎক্ষণাৎ অভিযুক্ত কনষ্টেবল বশিরকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি আগাম তথ্য দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।এর পরেও বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখছেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে কনস্টেবল বশিরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।তিনি আরো জানান,আসামীদের গ্রেফতারে জোর প্রচেষ্টা চলছে।