পিরোজপুর জেলা ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া ইউনিয়নে ১৫ জুলাই রোজ মংগলবার ঘটে গেলো এক অবাক করা ঘটনা।
আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগে মোস্তাফিজ নামের এক ব্যাক্তি পারিবারিক সমস্যার কারনে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। অনেক চেষ্টা করেও সন্ধান মিলেনি মোস্তাফিজের।
এদিকে মোস্তাফিজ ঢাকায় চাকুরী করেন এবং বিবাহ করেন। বিবাহ করে তার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় কামরাঙ্গিরচড় বসবাস করা শুরু করেন।
মোস্তাফিজ ২০১৮ সালে ঢাকায় তার স্ত্রী ও সন্তানদের কাছেই মৃত্যু বরন করেন। মোস্তাফিজ এর মৃত্যুর পরে তার স্ত্রীর কাছ থেকে তথ্য ও ১৯৯০ সালের পাসপোর্ট নিয়ে গ্রামের বাড়ির ঠিকানা পাইবার জন্য বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা করে যান মোস্তাফিজ এর সন্তানেরা।
২০২৫ এ এসে পিরোজপুর এর ভান্ডারিয়ার ইব্রাহিম খলিল (৩০) গ্রাম গৌরিপুর তার সাথে পিতার বিষয় আলাপ আলোচনা করেন মোস্তাফিজ এর ছেলে মাসুদ(২৫)। পরবর্তীতে ইব্রাহিম মাসুদের কাছে তার বন্ধু মুহাম্মদ মেহেদী হাসান সভাপতি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বাস্তবায়ন ও প্রশিক্ষণ হিট ফাউন্ডেশন ভান্ডারিয়া শাখা এবং প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মানব সেবা ব্লাড ফাউন্ডেশন এর কথা বলেন।
পরবর্তীতে তিন জনের একটা ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ করেন এবং প্রতিদিন আলাপ আলোচনা করেন।
মেহেদী হাসান চেস্টা করেও তেমন কোনো তথ্য না পাওয়ায় মাসুদ ও মেহেদী হাসান সিদ্ধান্ত নেয় একদিন ধাওয়ায় সময় দিবেন ঠিকানা বের করার জন্য। ১৪ জুলাই রোজ সোমবার মাসুদ ভান্ডারিয়ার মেহেদী হাসান এর সাথে আলাপ করে ঢাকা থেকে বরিশাল এর উদ্দেশ্যে লঞ্চে রওনা হোন।
১৫ তারিখ রোজ মঙ্গলবার সকালে মাসুদ তার সাথে খালাতো ভাইকে নিয়ে ভান্ডারিয়ায় আসেন এবং মেহেদী হাসান, রিফাত ও রুবেলের সহযোগিতা নিয়ে ধাওয়া ছুটে যান।
ব্লাড ফাউন্ডেশন এর ধাওয়া ইউনিয়ন শাখার স্বেচ্ছাসেবক সজল মৃধা, হাসান সিকদার শোভন, সচী, ফাহিম জামানসহ স্থানীয় আরো ৮/১০ জনের সহযোগিতা নিয়ে মোটামুটি তথ্য বের করেন এবং ধারণা নিয়ে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছুটে যান আব্দুল হক মাওলানার বাড়িতে।
ধাওয়া চেয়ারম্যান বাড়ির পাশে হাজি বাড়ি গিয়ে মোস্তাফিজ এর বড় ভাইয়ের সাথে সাক্ষাত করেন। ৪০ বছর আগে চলে যাওয়া ভাইয়ের ছবি দেখেন এবং আলোচনার মাধ্যমে সঠিক প্রমান হওয়ার পরে ২০১৮ সালে মোস্তাফিজ এর মৃত্যুর কথা শুনে মোস্তাফিজ এর বড় ভাই ও মোস্তাফিজ এর ছোটো ছেলে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পরেন।
পরবর্তীতে উভয় খুশি হোন।
এদিকে মৃত মোস্তাফিজের আরেক ভাই মতিউর রহমান খুলনা থাকেন। তাকে মোবাইল ফোনের মাধমে জানালে সে পরবর্তীদিন ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি আসার কথা জানান।
মাসুদ তার ঠিকানা ও পরিবার পেয়ে মেহেদী হাসান এর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বড় চাচার আন্তরিকতার কারনে মাসুদ এখন তার দাদা বাড়ি বড় চাচার বাসায় অবস্থান নিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বাস্তবায়ন ও প্রশিক্ষণ হিট ফাউন্ডেশন ভান্ডারিয়া উপজেলা শাখার সহ সভাপতি আল রিফাত জানান আমাদের কাছে বিষয়টি আসার পরে আমরা চেষ্টা করি এবং পরবর্তীতে সন্ধ্যান পাওয়ায় আমরা খুবই খুশি। মাসুদের অধিকার আদায়ের জন্য কোনো ধরনের সহোযোগিতার প্রয়োজন হলে হিট ফাউন্ডেশন ভান্ডারিয়া উপজেলার পক্ষথেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।