মোংলা উপজেলার ০৬ নং চিলা ইউনিয়নে ০১ নং ওয়ার্ডের সুন্দরবন ঘেঁষা গ্রাম দক্ষিণ হলদিবুনিয়া, এই গ্রামের মোঃ মোস্তফা সরদার’র ছেলে মোঃ রবিউল ইসলাম। ব্যাবসার পাশাপাশি বাড়িতে বসেই রোজগারের সিদ্ধান্ত নেন। মা ও স্ত্রীর সহযোগিতায় নিয়ে মোংলা উপজেলায় চিলা ইউনিয়নে বৈদ্দমারী দক্ষিণ হলদিবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক স্কুল মাঠ প্রাঙ্গণের পাশে প্রথমত ছোট্ট একটি ঘরের আঙ্গিনায় ৬ মাস আগে শুরু করেন মাশরুম চাষ, বর্তমানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর সহযোগিতায় তাকে দেওয়া হয় ১২ ফুট/২২ ফুট এর দুইটি ঘর যার নামকরণ করা হয় ভাইভাই মাশরুম সেন্টার।প্রধান সড়কের পাশে মাশরুম সেন্টারের অবস্থান। তাই প্রতি মাসে এই সেন্টার হতে যে মাশরুম উৎপাদন হয় বিক্রির জন্য কোনো হাটবাজারে যাওয়া লাগে না। উদ্যোক্তা ও সড়কে চলাচলরত পথচারী ও স্থানীয়রা তার মাশরুম চাষ ঘর থেকে কিনে নিয়ে যায়।
মাশরুম সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, তরুণ উদ্যোক্তা রবিউল ইসলাম তার মাশরুম সেন্টারে কাজ করছেন। পিপি ব্যাগে রোপণ করা মাশরুমে তিনি পানি স্প্রে করছেন। এ সময় কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, রবিউল ইসলাম ঢাকার সাভারের জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কেন্দ্র হতে চাষ পদ্ধতি জেনে আসেন ও খুলনা হটি কালচার থেকেও ৩০ জন উদ্যোক্তাদের সাথে নিয়ে প্রশিক্ষণ নেন। মাশরুম চাষ সম্পর্কে তিনি বলেন, সামান্য জায়গা, অল্প পুঁজি আর ইচ্ছা শক্তি হলেই এটি সম্ভব।
চাষের জন্য পিপি ব্যাগ দরকার, এরপর ওই ব্যাগে পরিমাণ মত গমের ভূষি, কাঠের গুড়া, ধানের তুষ, পরিমাণমত চুন, সমপরিমাণ পানি দিয়ে মিশ্রনটি প্যাকেট করে মুখ বেঁধে বাষ্প আকারে ১২০ ডিগ্রি তাপে ১.৫ কেজি চাপে ০৪ ঘন্টা রাখতে হয়। এরপর উঠিয়ে ১২ ঘন্টা ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে এরপর এই বানিজ্যিক স্পন প্যাকেটের মধ্যে মাশরুমের মূল উপাদান (মাদার) প্রতিটি ব্যাগে ঢুকিয়ে ব্যাগটি নির্দিষ্ট একটি স্থানে রেখে ব্যাগ হতে দুটি ছিদ্র করতে হয়। কিছু দিন পরেই ওই ছিদ্র দিয়ে মাশরুম বের হতে শুরু করে। একটি ব্যাগ হতে আড়াই শ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যায়। ওই ধরনের চারটি ব্যাগ হতে ১ কেজি মাশরুম হয় যার বাজার দর আনুমানিক ৩০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে।
মাশরুম চাষে কোনো সার বা কীটনাশক লাগে না, এর একমাত্র খাদ্য হচ্ছে পানি, দিনে তিনবার পানি স্প্রে করতে হয়। ব্যাগ হতে মাশরুম বের হলে চার পাঁচ দিনের মধ্যেই তা বাজারজাত শুরু করা যায়। তিনি বলেন, এই সেন্টারে ওয়েস্টার ও ঔষধী জাতের মাশরুমের চাষ করা হয়। বর্তমানে তার সেন্টারে ৪০০শত বানিজ্যিক মাশরুম স্পন প্যাকেট আছে।
সার্ভিস পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন, কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম অতিরিক্ত পরিচালক, খুলনা অঞ্চল, খুলনা। কৃষিবিদ মোতাহার হোসেন, উপপরিচালক, বাগেরহাট। কৃষিবিদ মোসাদ্দেক হোসেন, সিনিয়র মনিটরিং অফিসার, পাটনার প্রকল্প,খুলনা অঞ্চল। কৃষিবিদ প্রশান্ত হাওলাদার, উপজেলা কৃষি অফিসার, মোংলা। প্রসেনজিৎ মন্ডল,উপ-সহকারী কৃষি অফিসার চিলা,মোংলা। কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, মোংলা উপজেলায় ব্যাপক ভাবে মাশরুমের চাষ শুরু হয়নি। অল্প কিছু ব্যক্তি এই চাষ শুরু করেছেন এবং তারা লাভবান হচ্ছেন বলে খবর পেয়েছি,এবং বর্তমানে যে রবিউলের মাশরুম সেন্টার আছে আপনারা এখান থেকে মাশরুমের বিষয়ে বিস্তারিত শিক্ষা নিবেন এবং যাদের দরকার হবে এখান থেকে বানিজ্যিক স্পন ক্রয় করবেন।