বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ৯৮ দিন পর কবর থেকে মিরাজ খানের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে মরদেহ। বুধবার (১ত নভেম্বর) নভেম্বর গভীর রাতে লালমনিরহাটের আদিতমারীর মহিষখোচায় নিজ বাসভবনের কবর স্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।মিরাজ মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হয়ে ঢাকায় মোবাইলের দোকানে কাজ করতেনে। তিনি উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের খানপাড়া এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে।আর্থিক অস্বচ্ছলতার জন্য পড়াশুনা তেমন করতে না পেরে কলেজে ভর্তি হয়ে ঢাকায় গিয়ে মোবাইলে কাজ করতেন মিরাজ। ছাত্রত্বের টানে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেন তিনি। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর মিছিলে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হয় মিরাজ। পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা ঢাকায় মেডিকেলে ও ক্লিনিকে অপারেশন করানোর জোর চেষ্টা করেও চিকিৎসকের দেখা না পাওয়ায় রংপুর মেডিকেলে নিয়ে আসেন। সেখানে গত ৮ চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর তার মৃত্যু হয়।পরে তার বাবা আব্দুস সালাম ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয়েছে, লালমনিরহাট- এক আসনের সংসদ সদস্য মো. মোতাহের হোসেন, লালমনিরহাট- দুই আসনের সংসদ সদস্য মো. নুরুজ্জামান আহমেদ (সাবেক মন্ত্রী) ও লালমনিরহাট- তিন আসনের সংসদ সদস্য মো. মতিয়ার রহমানসহ মোট ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে।মরদেহ উত্তোলনের জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) এ কে এম ফজলুল হক, আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে আলম সিদ্দিকী, আদিতমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সানাউল হাসানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক কাওসার হোসেন বলেন, ভিকটিম মিরাজের বাবার দায়েরকৃত মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য লাশউ উত্তোলন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাজ শেষে আবারও মরদেহ ফেরত নিয়ে আসা হবে।