মুঠোফোনে পোড়া একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) ছবি। সেই ছবি দেখিয়ে এক নারীর সন্ধান করছিলেন সাথী আক্তার নামের আরেক নারী। মুঠোফোনে যে নারীর এনআইডির ছবি, তাঁর নাম লামিয়া আক্তার সোনিয়া। তিনি সাথী আক্তারের খালা।
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কথা হয় সাথী আক্তারের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে জানান, দুপুরে মেয়ে আসমাউল হোসনা জাইরাকে স্কুল থেকে নিতে এসেছিলেন তার খালা। এর পর থেকে তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তবে মেয়ে আসমাউলকে পাওয়া গেছে। লামিয়া আক্তারের পোড়া এনআইডি ফেসবুকে দেখতে পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
আসমাউল হোসনা মাইলস্টোনের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। দুর্ঘটনায় জাইরার কিছু হয়নি, সে নিরাপদেই ছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করেছে।
সাথী আক্তারের স্বামী আলমগীর হোসেন বলেন, ঢাকার যেসব হাসপাতালে হতাহতদের নেওয়া হয়েছে, সব হাসপাতালে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। কোথাও লামিয়াকে পাওয়া যাচ্ছে না। মোবাইল নম্বরও বন্ধ আছে। সব জায়গায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
বিমান দুর্ঘটনায় নিখোঁজ স্বজনদের কেউ কেউ এখনো স্কুলে এসে খোঁজ করছেন। কেউ স্বজনদের ছবি দেখাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন। ভেতরে আর কেউ আছে কি না, উদ্ধার কাজ শেষ কি না এসব জনতে চাইছেন।
উম্মে আফিয়া নামের আরেক শিক্ষার্থীর খোঁজ করছিলেন স্বজনেরা। সে স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। আফিয়ার বাবা আব্দুল কাদির, মা তানিয়া আক্তার।
রাত পৌনে আটটার দিকে স্কুলের মাঠের পাশে কথা হয় আফিয়ার চাচি শম্পা আক্তারের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আফিয়ার ক্লাস শেষ হয় বেলা একটায়। কিন্তু ক্লাস শেষের পর সে স্কুলেই কোচিং করত। তাই তখন আফিয়াকে কেউ নিতে আসেনি। দুর্ঘটনার পর থেকে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না।
আজ দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে এ পর্যন্ত ২০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) হতাহতের এ সংখ্যা জানিয়েছে।