মৌলভীবাজার বারের তরুণ আইনজীবী সুজন মিয়া হত্যার রহস্য খুলতে শুরু করেছে।
১০ই এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কনফারেন্স হলে পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের জানান- মামলা রুজু হওয়ার পর পুলিশ সুপার এম কে এইচ, জাহাঙ্গীর হোসেন (পিপিএম), মৌলভীবাজার এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) নোবেল চাকমার নেতৃত্বে গাজী মোঃ মাহবুবুর রহমান, অফিসার ইনচার্জ, মৌলভীবাজার সদর মডেল থানা, মিনহাজ উদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত), মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিরস্ত্র) সামছুল ইসলামসহ একটি বিশেষ টিম ঘটনাস্থল এলাকার বিভিন্ন সিসি ফুটেজ সংগ্রহ পূর্বক পর্যালোচনা এবং তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে ০৯/০৪/২০২৫ তারিখ অত্র হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বাসুদেবশ্রী এলাকার সামছুল হকের ছেলে নজির মিয়া ওরফে মুজিব (২৫), রঘুনন্দনপুর এলাকার মৃত সিজিল মিয়ার ছেলে মো. আরিফ মিয়া (২৭), দিশালোক ইটা সিংকাপন এলাকার আনসার মিয়ার ছেলে হোসাইন আহমদ ওরফে সোহান (১৯), রাজনগর উপজেলার মাথিউড়া চা বাগানের মনা নাইডুর ছেলে লক্ষণ নাইডু (২৩), এবং নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার কাশিপুর পূর্বপাড়া এলাকার মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রহিম (১৯)কে গ্রেফতার করে। এছাড়া পলাতক অন্য আসামীদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে পলাতক আসামীদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
হত্যা কাণ্ডের পিছনের কারণ উদঘাটন হয়েছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বাসুদেবশ্রী এলাকার সামছুল হকের ছেলে নজির মিয়া ওরফে মুজিবের সাথে অগ্রণী ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড একই এলাকার মিসবাহের পূর্ব বিরোধ ছিল। মুজিব তার প্রতিপক্ষ মিসবাহকে শায়েস্তা করতে চেয়েছিলেন। এজন্য রাজনগর উপজেলার মাথিউড়া চা বাগানের মনা নাইডুর ছেলে দুধ ব্যবসায়ী লক্ষণ নাইডুর সহযোগিতায় কয়েকজন লোক ভাড়া করা হয়। মূল পরিকল্পনাকারী মুজিব ভাড়াটে লোকজন ও লক্ষনের কাছে মুঠোফোনের মাধ্যমে মিসবাহ’র ছবি পাঠায়।ঘটনার দিন ৬ই এপ্রিল রবিবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ভাড়াটে খুনিরা মৌলভীবাজার পৌরসভার সম্মুখে ফুসকার দোকানে চেয়ারে বসা আইনজীবী সুজনকে দেখে তাদের ‘টার্গেট’ মিসবাহ মনে করে। তারা টার্গেটের ছবির ব্যক্তির সাথে মিল থাকার বিষয়টি মূল পরিকল্পনাকারী মুজিবকে জানালে ভিডিও কলের মাধ্যমে সুজনকে দেখে মিসবাহ ভেবে মারতে বলেন মুজিব। নির্দেশ পেয়ে ১০/১২ জন দুষ্কৃতিকারীরা সুজন মিয়ার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এসময় ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করলে গুরুতর আহত সুজন মিয়াকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। মৃত্যুর ৩দিন পর ৮ই এপ্রিল মঙ্গলবার নিহতের ভাই এনামুল হক সুমন মৌলভীবাজার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।