মাত্র ২৪ ঘন্টায় ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দায় পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া গলিত মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সেই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে রোহান মিয়া (২৫) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত রোহান তারাকান্দা থানার দাদরা এলাকার আলাল মিয়ার ছেলে। অভিযানে তার কাছ থেকে নিহতের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে।
পিবিআই জানায়, শুক্রবার (৩ জুলাই) সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে তারাকান্দা থানার দাদরা গ্রামের ঢাকায় অবস্থানরত গেসু মিয়ার পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে অজ্ঞাত এক নারীর গলিত মরদেহ পাওয়া যায়। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ, র্যাব ও সিআইডির পাশাপাশি পিবিআইয়ের ময়মনসিংহ জেলা শাখার একটি টিম ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে ছায়া তদন্ত শুরু করে।
ধারাবাহিক তদন্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন অ্যাডিশনাল আইজিপি মোঃ মোস্তফা কামাল এর তত্ত্বাবধানে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার এর সার্বিক সহযোগীতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ পরিদর্শক(নিঃ),সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও তার টিম তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় নিহতের পরিচয় সনাক্তের মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীর পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হয় এবং গত ০৫ জুলাই শনিবার রাত অনুমান ০৩.৩০ ঘটিকায় ফুলপুর থানাধীন ফুলপুর বেপারী পাড়া এলাকা থেকে তদন্তে প্রাপ্ত আসামী রোহান মিয়াকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি ভুক্তভোগীর মোবাইল উদ্ধার করা হয়। পিবিআই মামলাটি স্ব উদ্যোগে গ্রহণ করে।
পিবিআই জানায়, নিহত সুফিয়া খাতুনের ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার পাতিলগাঁও এলাকার কেরামত আলীর মেয়ে। গত ২৮ জুন সন্দিগ্ধ আসামি রোহান নিজের বন্ধু আকিকুলের কাছ থেকে নিহত সুফিয়ার মোবাইল নম্বর নিয়ে তার সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে।
পরদিন (২৯ জুন) সুফিয়া নিজ বাড়ির পাশের বাজারে আসলে রোহান তার সঙ্গে দেখা করে। পরবর্তীতে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে সুফিয়াকে নিজের এলাকায় নিয়ে আসে। এরপর গেসু মিয়ার নির্জন বাড়িতে নিয়ে রোহান তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়। পরবর্তীতে ঝগড়ার একপর্যায়ে সে সুফিয়াকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে দেয়। এরপর সে সুফিয়ার সঙ্গে থাকা ৩ হাজার ৫০০ টাকা ও তার ব্যবহৃত অ্যান্ড্রোয়েড মোবাইলটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার জানান, পিবিআই এর আভিযানিক টিমের নিরলস প্রচেষ্টা ও পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি শাখার সহযোগীতায় মাত্র ০১ দিনের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস এই হত্যাকান্ডের আসামীকে গ্রেফতার করা এবং আসামীর হেফাজত থেকে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উল্লখ্য যে, আসামী রোহান পূর্বেও এইরূপ হত্যাকান্ড জনিত মামলার সাথে জড়িত মর্মে তথ্য পাওয়া গিয়েছে। আসামী রোহান মিয়া (২৫) কে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার ঘটনায় গ্রেফতার আসামী রোহান (২৫) এর সাথে আরও কারো সম্পৃক্ততা ছিল কিনা এবিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে।