যশোর সদর উপজেলার হামিদপুরে আর ডি এফ (R D F) নামে একটি ভুয়া এনজিওর বিরুদ্ধে প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সদস্য সংগ্রহের নাম করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই সংস্থাটি। গত ১৬ নভেম্বর (রবিবার) রাতে এই প্রতারণার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে, যখন ফতেপুর ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া ব্যাংকার শফিকুজ্জামান কাছ থেকে একটি ভাড়া বাড়িতে এনজিওটির কার্যক্রম গড়ে উঠেছিল। মাত্র সাত দিনের ভিতর গ্রাহকের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা নিয়ে লাপাত্তা দেয় ওই ভুয়া এনজিও কর্মীরা ।
একজন ভুক্তভোগী বিদেশগামী গ্রহীতা কান্নায় ভেঙে পড়ে জানান, “আমি এই এনজিওকে ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকা দিয়েছিলাম এই আশায় যে সোমবারে লোনের টাকা পাব। কিন্তু এখানে এসে দেখি এনজিও কর্মকর্তারা পালিয়েছেন। আমার সব শেষ হয়ে গেল! এখন আমি কীভাবে বিদেশে যাব? আমার আর বিদেশ যাওয়া হলো না।”
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, হামিদপুর এলাকার একটি ভাড়া ফ্ল্যাট নিয়ে আর ডি এফ নামের এই কথিত এনজিওটি তাদের অফিস পরিচালনা করত। রবিবার সকাল থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য গ্রাহকরা একে একে অফিসে আসতে শুরু করেন। কিন্তু অফিসে এসে তারা দেখতে পান তালা ঝুলছে এবং এনজিও কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ। রাত পর্যন্ত শতাধিক ভুক্তভোগী গ্রাহক অফিসের সামনে অবস্থান করেন।
ভুক্তভোগীদের দাবি, বাড়ির মালিকের সহযোগিতায় এনজিও কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তারা ব্যর্থ হন। বিপুল সংখ্যক ভুক্তভোগী গ্রাহকের উপস্থিতিতে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। পরে গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল এবং স্থানীয় প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ভুক্তভোগীদের অভিযোগ শোনেন। তারা পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বাড়ির মালিক শফিকুজ্জামান সাথে কথা বলে তিনি জানান তাদের কাছ প্রয়োজনীয় কোন কাগজপত্র না দিয়ে ওই বাড়িটি ভাড়া হিসেবে দিয়েছিলেন। তারা পরিচয় ডকুমেন্ট কাগজপত্র চাইলে তারা আশ্বাস দেই শুধু। এর মধ্যে ৭ দিনের মাথায় চটপট দেই তারা
গ্রাহকরা অভিযোগ করেন যে, এনজিও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাড়ির মালিকের যোগসাজশ থাকতে পারে। সচেতন মহলের প্রশ্ন, বাড়ির মালিক একজন ব্যাংক কর্মকর্তা হয়েও কোনো প্রকার বৈধ কাগজপত্র বা যথাযথ ডকুমেন্ট ছাড়া কীভাবে একটি অফিস ঘর ভাড়া দিলেন? ভুক্তভোগীরা এখন তাদের সঞ্চিত টাকা ফেরত পেতে বাড়ির মালিকের সহযোগিতা কামনা করছেন। তারা আরও জানান, দ্রুত টাকা আদায়ের জন্য তারা এনজিও অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবেন এবং প্রয়োজনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপার (এসপি) বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবেন।