জমি দখল নিয়ে যশোরে সৎ ভাইদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, মামলা ও হামলার শিকার এক পরিবার
যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের চাঁদপাড়া গ্রামে জমি দখলকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় এক নারীর সৎ ভাইদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন যশোর সদর উপজেলা ভূমি অফিসের প্রসেস সার্ভার আব্দুল মাজেদ মীর এবং ইউএনও অফিসের কর্মচারী কামরুল মীর।
ভুক্তভোগী রমজান আলী চান্দু জানান, ২০২৫ সালের ২ জুন জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করেন অভিযুক্ত মাজেদ মীর, কামরুল মীর, আব্দুস সাত্তার, মজিদ মীর ও ওয়াজেদ মীর। ওই ঘটনায় তিনি যশোর আদালতে সিআর-২১৫৬/২৫ নম্বর একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রমজান আলীর খালা কুলসুম বেগম বলেন, “আমার বাবা জীবিত অবস্থায় আমাদের সবার মাঝে জমি ভাগ করে দেন। আমার নামে চাঁদপাড়া মৌজার জেএল নং ২০৪, দাগ নং ৭৫১ এর ৩৩ শতাংশ জমি রয়েছে। আমি নিয়মিত খাজনা ও নামজারি করে আসছি। এর মধ্যে ১২.৫ শতাংশ জমি বিক্রি করেছি। বাকি ২০.৫ শতাংশ জমি নিয়ে সৎ ভাইয়েরা জাল দলিল তৈরি করে জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করছে।”
তিনি আরও জানান, জমি বিক্রির সময় সম্ভাব্য ক্রেতাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে জমি বিক্রি করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী মা মর্জিনা বেগম বলেন, “স্বামীর মৃত্যুর পর ভিটে আঁকড়ে থাকলেও সৎ ছেলেরা আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। এখন মেয়ের জমিটুকুও বুঝিয়ে দিচ্ছে না। বরং হুমকি দিচ্ছে প্রাণনাশের।”
এ বিষয়ে চাঁদপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের এসআই অহিদুজ্জামান জানান, “রমজান আলী চান্দুর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। তারা সাড়া না দেওয়ায় পরবর্তীতে ওয়ারেন্ট অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হয়, তবে কাউকে পাওয়া যায়নি।”
অভিযুক্ত মাজেদ মীর এ বিষয়ে ফোনে বলেন, “এটি আমাদের পারিবারিক বিষয়, সমাধানের চেষ্টা করছি।” তবে অপর অভিযুক্ত কামরুল মীর ফোন রিসিভ করেননি।
যশোর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ইয়াসমিন বলেন, “দুই পক্ষের কাগজপত্র ও শুনানির ভিত্তিতে যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত মালিককে জমি বুঝিয়ে দেওয়া হবে।”
স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসনের নিরপেক্ষ ও কার্যকর পদক্ষেপই পারে এ বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান নিশ্চিত করতে।