দক্ষিণখান সংবাদদাতা: রাজধানীর দক্ষিনখানের দক্ষিণ মোল্লারটেক এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের দৌরাত্ম্যে অসহায় হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। সর্বত্র যেন কুকুরেরই আধিপত্য চলছে। ১০ থেকে ১৫টি করে একেকটি কুকুরের দল দক্ষিণ মোল্লারটেকের অলি গলি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, শিশু, পথচারীসহ সাধারণ মানুষকে তাড়িয়ে কামড়ানোর চেষ্টা করছে সংঘবদ্ধ কুকুরের দল।
এখানে বেওয়ারিশ এসব কুকুর নিয়ন্ত্রণে কোনও সরকারি বা এলাকাভিত্তিক উদ্যোগ নেই। ফলে দিনকে দিন বেড়েই চলছে এদের উপদ্রব।
কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, মোল্লারটেক এলাকায় লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে কুকুর। এদের উপদ্রবে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। এরা সংঘবদ্ধভাবে সারাদিন মারামারি ও হৈচৈ করার ফলে এলাকাবাসীকে থাকতে হয় আতংকের মধ্যে। কখনও কখনও গলি বন্ধ করে দলে দলে বসে ও শুয়ে থাকে কুকুর। ফলে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা ভয়ে স্কুলে যেতে চায় না। পথচারীরা একা রাতে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে ভয় পায়। কিন্তু অমানবিক হওয়ায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১২ সাল থেকে সারা দেশে কুকুর নিধন বন্ধ রয়েছে। ফলে সিটি কর্পোরেশন কুকুর নিধন করতে পারছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, দক্ষিণ মোল্লারটেকের বায়তুল মামুর জামে মসজিদ রোড ও এর আশপাশের অলিগলি, গাজীবাড়ী কবরস্থান রোডে কোথাও শুয়ে আছে কুকুর, আবারও কোথাও দল বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তবে একেকটা দলে ৫-৭টি, কখনো আবার ৭-১০টি কুকুর থাকে। এখানে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা অনেক বেশি বলা চলে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতিদিনই কুকুরের কামড়ে কেউ না কেউ আহত হচ্ছেন। কয়েকটি কুকুর পাগল হয়ে গেছে মানুষ দেখলেই কামড়ে দেয়। ফজরের নামাজ আদায় আর সকালে হাঁটাহাঁটি করতে বের হলেই কুকুরের আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে। কয়েকদিন আগে বায়তুল মামুর জামে মসজিদ সংলগ্ন চা দোকানদার বাদলের ছেলে আব্দুল্লাহ স্কুল থেকে ফেরার সময় কুকুর কামড়ে দেয়। পরে মহাখালী সংক্রামন ব্যাধি হাসপাতালে নিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। আবদুল্লাহ এখন কুকুরের ভয়ে স্কুলে যেতে চায় না। বাদল বলেন, ‘ছেলেকে কুকুর কামড়ানোর পর চা দোকান বন্ধ রেখে সারাদিন আমার ছেলেকে নিয়ে দৌড়াতে হয়েছে। কি যে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।’
দক্ষিণ মোল্লারটেকের বাসিন্দা আলাউদ্দিন হোসেন জানান, প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। কুকুরের কারণে অনেকে রাতে বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পায়। অনেক স্থানে নারী ও শিশুরা কুকুরের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়া এক রকম বন্ধ করে দিয়েছেন। কুকুর গুলো রাস্তায় দলে দলে এমনভাবে বসে থাকে চলতে গেলে ভয় লাগারি কথা। এছাড়া বাসাবাড়িতে ময়লা ফেলার পাত্র রেখে শান্তি পাওয়া যায় না। যখন তখন কুকুর বাসায় ঢুকে ময়লার বালতিতে মুখ দিয়ে এলোমেলো করে মেঝে ও সিড়িতে ময়লা ছড়িয়ে নোংরা করে রেখে যায়।
সব মিলিয়ে বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন দক্ষিণ মোল্লারটেকবাসী। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।