প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম রানা প্লাজা ধসের ঘটনাকে “আওয়ামী লীগের তৈরি ট্র্যাজেডি” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ শিল্পদুর্ঘটনা রানা প্লাজা ধসে অন্তত ১,১৩০ জন মানুষ প্রাণ হারান, যাদের অধিকাংশই নারী পোশাকশ্রমিক।
বুধবার (১২ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, “ভবন ধসের এক দিন আগে প্রকৌশলীরা ভবনটিকে স্পষ্টভাবে ‘অপরিচালনাযোগ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাবে সাহসী হয়ে ওঠা সোহেল রানা কর্মীদের জোর করে আবার ভবনে ফিরিয়ে আনেন।”
তিনি আরও বলেন, “দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের দক্ষিণ এশিয়া ব্যুরোপ্রধান জিম ইয়ার্ডলি তার প্রতিবেদনে সোহেল রানা ও তৎকালীন সাভার আসনের আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য মুরাদ জংয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রচারযন্ত্র নিশ্চিত করেছিল যেন রানার দলীয় পরিচয় আড়ালেই থাকে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোকেও চাপ দেওয়া হয়েছিল যাতে তারা কেবল উদ্ধার অভিযান ও হতাহতের সংখ্যা নিয়েই সংবাদ প্রকাশ করে।”
শফিকুল আলম বলেন, “সোহেল রানা কোনো ব্যতিক্রম নন; তিনি তখনকার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কৃতিরই এক স্বাভাবিক ফল। শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসন শুধু একনায়কতন্ত্রকে পাকাপোক্ত করেনি—বরং দেশজুড়ে অসংখ্য ‘স্থানীয় দানব’ তৈরি করেছে। সোহেল রানা ছিলেন তাদেরই একজন।”
তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, “নিজাম হাজারী ও শামীম ওসমান তাদের নিজ নিজ এলাকায় ছিলেন ‘দানবপ্রধান’—দলের ছায়াতলে গড়ে ওঠে তাদের অবাধ ক্ষমতার প্রতীক। এমনকি শিক্ষিত সমাজেও দেখা গেছে একই বিষাক্ত আনুগত্য। ‘আওয়ামী চেতনা রক্ষার’ নামে বুয়েটের ছাত্ররা পিটিয়ে হত্যা করেছিল আবরার ফাহাদকে।”
প্রেস সচিবের মতে, “এসব ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন উদাহরণ নয়; বরং ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব ও দায়মুক্তির সংস্কৃতির এক অনিবার্য পরিণতি।”