রাজশাহীর তালাইমারিতে অনুমতিবিহীন বহুতল ভবন নির্মাণ, ভবন থেকে পার্শ্ববর্তী বাড়িতে ময়লা-আবর্জনা নিক্ষেপ, প্রতিবাদে দুর্ব্যবহার এবং পরে একাধিক মিথ্যা মামলার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলামের বড় ভাই তরিকুল ইসলাম।
শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১২টায় রাবির পরিবহন মার্কেটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ছানোয়ারুল ইসলাম রাঙা, যিনি বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশনের একজন কর্মকর্তা এবং ডায়মন্ড টাওয়ার নামক একটি ভবনের মালিক, তিনি তাদের পার্শ্ববর্তী স্থানে অনুমতি ছাড়া আটতলা একটি ভবন নির্মাণ করেন। অথচ ওই স্থানে ছয়তলা পর্যন্ত নির্মাণের অনুমোদন ছিল। কোনো ফাঁকা জায়গা না রেখেই ভবনটি নির্মাণ করায় আশপাশের বাসিন্দারা ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।
তরিকুল বলেন, ভবনটি বর্তমানে একটি মহিলা ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ছাত্রাবাসের জানালা ও বারান্দা থেকে প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের ময়লা-আবর্জনা, এমনকি ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন তাদের বাড়ির ছাদ, বারান্দা এবং আঙিনায় ছুঁড়ে ফেলা হয়। এ নিয়ে একাধিকবার ভবন মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও বরং তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, “বিশেষ করে ভবনের মালিকের স্ত্রী প্রায়ই আমাদের পরিবারের সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একবার রাশেদুলকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘মেসের মেয়েরা এসব আবর্জনা ফেলবে, আর তুই পরিষ্কার করবি।’”
এ অবস্থায় প্রতিকার চেয়ে রাশেদুল বোয়ালিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন, যা পরবর্তীতে তাদের অনুরোধে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি।
তরিকুল জানান, এরপর তারা রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ)-এর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। আরডিএ তদন্ত শেষে ২৬ জুন ছানোয়ারুল ইসলামের নামে একটি চিঠি ইস্যু করে এবং তাকে ৯ জুলাই শুনানির জন্য ডেকে পাঠায়। কিন্তু ছানোয়ারুল রাঙা সেই শুনানিতে উপস্থিত হননি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, আরডিএর চিঠি পাওয়ার পর ভবনের মালিক ও তার স্ত্রী আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তারা রাশেদুলকে আর্থিক সমঝোতার প্রস্তাব দেন, নানা রকম ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করেন, এমনকি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা মামলার হুমকি দেন।
“সম্প্রতি ভবন মালিকের স্ত্রী হুমকি দিয়েছেন, ‘তোর নামে আমার ম্যানেজারের টাকা চুরির মামলা দেবো, জেলে পচবি।’ এরপর তারা রাশেদুলের বিরুদ্ধে তিন লাখ টাকা চাঁদাবাজির একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে,” বলেন তরিকুল।
তরিকুলের অভিযোগ, “এতে করেও সন্তুষ্ট না হয়ে আরেকটি পুরাতন চাঁদাবাজির মামলায় যেখানে ৩৬ জনের নাম রয়েছে, সেখানে কৌশলে রাশেদুলের নাম জুড়ে দেওয়া হয়েছে—যার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।”
এই মামলার জেরে গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে তালাইমারির নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ রাশেদুলকে আটক করে। এ সময় বাসায় কেবল তার মা উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখায়নি।